অনেকেই জানেন না এরকম তথ্য দিয়ে শুরু করা যাক। বিশ্বখ্যাত পরিচালক সারজিও লিওনের ডলার ট্রিলজির (এ ফিস্টফুল অফ ডলার, ফর এ ফিউ ডলার মোর, দ্যা গুড দ্যা ব্যাড এন্ড দ্যা আগলি) প্রথম চলচ্চিত্রটি, অর্থাৎ এ ফিস্টফুল অফ ডলার কুরোসাওয়ার এই মাস্টারপিসটির প্লট অনুসারে। চুরিই বলা চলে, তবে পরের দুটি চলচ্চিত্রের মধ্যে তিনি এই চুরির অপরাধ পুষিয়েই দিয়েছেন বলে চলচ্চিত্রমোদীরা স্বীকার করবেন!
একজন সামুরাই (জাপানী যোদ্ধা) এর এক অদ্ভুত গ্রামে আসার মধ্যে দিয়ে গল্প শুরু হচ্ছে, যেখানে শুরুতেই তার চোখে পড়ে একটি কুকুর মুখে করে নিয়ে যাচ্ছে মানুষের কাটা হাত। আপাত জনমানবশূন্য শহরের পথে ঘুরতে থাকে সে, জানলা দিয়ে লুকিয়ে তাকে দেখে অনেক অনেক চোখ। এভাবেই শুরু হচ্ছে ওজিম্বো, মূল চরিত্র ত্রিশ বছরের সামুরাই, যে কিনা নিজের নামটিও জানাতে আগ্রহী নয়। এখান থেকেই ক্লিন্ট ইস্টউড এর বহুল জনপ্রিয় “দ্যা ম্যান উইথ নো নেম” অনুপ্রাণিত।
যাই হোক, শহরে দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি চলছে। সামুরাই এর উদ্দেশ্য দু’দলেরই তার ওপর একটা ইন্টারেস্ট তৈরী করা যাতে তাঁকে বডিগারড হিসেবে দু’দলই চায়। এই দুই দলই তাঁদের নিজস্ব লোকজন নিয়ে শহরের দুটো মাথা দখল করে আছে। শহরবাসী ঘরবন্দী কাটাচ্ছে দিনের পর দিন। এদিকে, সে দুদলেরই তোল্লাই পাচ্ছে এবং মূলত কোন দলকেই রক্ষা করাতে মাথাব্যথা নেই তার। তার মোরালিটিহীনতা এতটাই প্রতিষ্ঠিত যে সে যখন ভালো কিছু করে তখনই যেন অবাক লাগে। এভাবেই গল্প এগোয়। দাবা খেলার মতন ছক কষে সে ।
এরকম সময়ে আসে নতুন চরিত্র। এক পক্ষের দলনেতার ছোটভাই সে, এক হাতে পিস্তল- যা কি না শহরের একমাত্র। সাপের মত ধূর্ত পিস্তলধারী এই ব্যক্তই সামুরাই এর প্ল্যান ভেস্তে দেয়। তরবারীর শক্তি আর পিস্তল তো এক মাপে পড়ে না! ঠান্ডা মাথায় খুন করতে পারা এই লোক রক্তপাতের হিসেব বাড়িয়ে দেয় অনেকাংশে। এভাবেই গড়াতে থাকে খুনোখুনির এক মহাকাব্যিক চলচ্চিত্র। কুরোসাওয়ার অন্যান্য সিনেমার মতই প্রচণ্ড গতিশীল, একটুর জন্যেও বোর লাগবে না। থমথমে যুদ্ধের গল্পের মধ্যে আঁটিয়ে দেয়া নানান ডার্ক হিউমার। সিনেমার শুরুর দিকে শহরের একমাত্র আয় করতো কফিন বানানো লোকটি, মাঝপথে এসেই সেও বেকার। লাশ যখন একটা দু’টো, কফিনের দরকার তখনই পড়ে, অগুনতি লাশে নয়।
অসাধারণ কম্পোজিশন, অভিনয়। আইএমডিবির টপ ২৫০ সিনেমার ১১৪ তম এটি। ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভালে সেরা অভিনেতার জন্যে পুরষ্কারসহ ঝুলিতে অস্কার নোমিনেশনসহ অনেক পালকই রয়েছে এর মুকুটে। স্পয়লার না দিয়ে শেষের দিকের একটি দৃশ্য বলা যেতে পারে, সেই সাপের মত ধূর্ত ব্যক্তিটি পিস্তল তাক করে রয়েছে সামুরাই এর দিকে। তাতে গুলি থাকতেও পারে, নাও পারে। তার সুযোগও ছিল অস্ত্র কেড়ে নেবার, তার বদলে সে স্থির বসে অপেক্ষা করল যা আসে মেনে নেবে। কারণ, যুদ্ধ শেষ। সামুরাইকে মেনে নিতে হবে নতুনতর প্রজন্ম যা দেবে তার ঝুড়িতে। জীবননাট্যের এই নির্মম উপলব্ধির দার্শনিকতায় খুব কম পরিচালক আমাদের নিতে পারেন, নিঃসন্দেহে আকিরা কুরোসাওয়া তাঁদেরই একজন।
glycomet where to buy – buy precose pills for sale pill acarbose 25mg