মর্ত্যের নরক গুয়ানতানামো বে কারাগার
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বুকে “মর্ত্যের নরক” নামে খ্যাত গুয়ানতানামো কারাগার যার কুখ্যাতি ছিলো বন্দীদের ওপরে অমানুষিক নির্যাতনের, যার মাত্রা এতোটাই তীব্র আর ভয়ানক ছিলো যে যন্ত্রণা হতে মুক্তি পেতে বন্দীরা আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে যেতো অবিরত।
২০০২ সালে জর্জ ডব্লিউ বুশের নির্দেশে নির্মিত এই কারাগারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুল সীমানার বাইরে কিউবার দক্ষিণ-পূর্ব পাশের ক্যারিবীয় সাগরে অবস্থিত। এই কারাগার নির্মাণের মুল উদ্দেশ্য ছিলো ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনের ঘটে যাওয়া হামলার সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা বন্দীদের বিচার করার নিমিত্তে।
কিউবায় অবস্থিত ৪৫ বর্গকিলোমিটারের এই ভূমিটি ১৯০৩ সালে মূলত অধিগ্রহণ করা হয় মার্কিন নৌঘাঁটি স্থাপনের উদ্দেশ্যে, তবে প্রেক্ষাপট পাল্টাতে শুরু করে ১৯৯১ সাল হতে যখন এই স্থানে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বন্দী আটক করে রাখা শুরু হয়। কোন ধরণের অভিযোগ ছাড়াই নির্মাণের পরপরই এখানে বন্দী হিসেবে আটক করে রাখা হয় ২০ জন আফগানিস্তানীদের তালেবানে সংযুক্তির সন্দেহে। এ যাবতকাল অবধি এই কারাগারে ৭০০ এর অধিক বন্দিকে জঙ্গি সন্দেহে আটকে রাখা হয় এবং চালানো হয় অমানুষিক অত্যাচার।
একটি বিষয় জেনে রাখা ভালো, নৌঘাঁটি হিসেবে কিউবা হতে জায়গাটি ইজারা নেয়া হলেও কারাগার নির্মাণের বিষয়টি সম্পূর্ণ গোপন রাখা হয় এবং এ বিষয়ে ২০০৭ সালে কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রো জানান,
“আমেরিকার এহেন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ স্বরূপ গত ৫ দশক ধরে এই জায়গাটির ইজারা মূল্য বাবদ দেয়া প্রদত্ত একটি চেকও ক্যাশ করা হয় নি।”
তবে মজার বিষয় হলো, অনিচ্ছাকৃতভাবে একবার প্রদত্ত চেকের টাকা নগদ করা হয় তবে ওইবারের পর হতে একবারের জন্যও চেক গৃহীত হয় নি।
সময় ২০০৮ সালের, ২১ জানুয়ারি। আমেরিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন বারাক ওবামা। ভাষণে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, “আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে পারি যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাউকে নির্যাতন করবে না। দ্বিতীয়ত, গুয়ানতানামো কারাগার আমরা বন্ধ করবো এবং এখন যারা এখানে আটক আছে তাদের বিষয়ে কি করণীয় অচিরেই সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো।”
সে নিমিত্তে দায়িত্ব গ্রহণের পরেরদিন গুয়ানতানামো কারাগার বন্ধের লিখিত আদেশে স্বাক্ষর করেন তিনি, তবে তা আর বাস্তবায়িত হয়ে উঠে নি বিরোধী পার্টি কংগ্রেসের বিরোধিতার তোপে পড়ে।
তবে নব্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৬ সালে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় কারাগারটি পুনরায় “খারাপ মানুষ” দিয়ে ভরিয়ে ফেলার ঘোষণা দেন। বিবিসির মারফত জানা যায়, পরবর্তীতে নতুন অভিবাসন পরিকল্পনা ঘোষণার পাশাপাশি কিউবার বিতর্কিত গুয়ানতানামো বে কারাগার খোলা রাখার ঘোষণা দিয়ে নির্দেশনায় স্বাক্ষরও করেছেন। ২০১২ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় ৭০% আমেরিকান এই কারাগারটি খোলা রাখার ব্যাপারে মতামত দিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে তিনি বলেন,
“পাগলের মতো আবারও যুদ্ধক্ষেত্র দেখার জন্যে আমরা কয়েক হাজার ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীকে ছেড়ে দিয়েছিলাম। তাদের মধ্যে আইএসএ’র নেতা বাগদাদিও ছিলো। তারা শুধু সন্ত্রাসীই নয়, তারা শত্রু যোদ্ধাও। তারা যেমন সন্ত্রাসী তাদের সাথে তেমন আচরণই করা উচিত।”
সিদ্ধান্তটি ছিলো সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নেয়া সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণ বিরোধী। ট্রাম্পের নেয়া এই সিদ্ধান্তটিকে সাদরে স্বাগত জানায় রিপাবলিকান কংগ্রেসের সদস্যরা।
গুয়ানতানামো কারাগারকে কেনো মর্ত্যের নরক বলে আখ্যায়িত করেছিলো এক বন্দী? কি করা হতো বন্দীদের সাথে? বন্দীদের সবাই কি আসলেই অপরাধী ছিলো? কিভাবে নির্যাতন করা হতো তাদের? জানতে হলে দেখে নেয়া যাক বিষয়গুলো সম্পর্কে।
এ যাবতকাল ৯ জন বন্দী কারা হেফাজতে থাকা অবস্থায় গুয়ানতানামো বে কারাগারে মারা যায়। ২০০৬ সালে একই দিনে তিনজন বন্দী গলায় রশি দিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করে এবং আরবিতে লেখা সুইসাইড নোট রেখে যায় নমুনা হিসেবে।
উইকিলিকসের একটি তথ্য অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিম্নে ২২ জনকে গুয়ানতানামো বে কারাগারে বন্দী হিসেবে রাখার তথ্যও পাওয়া যায়। ওমর কাদের নামের ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরকে বন্দী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয় গুয়ানতানামো বে কারাগারে। পরে ২০১২ সালে তাকে কানাডার হেফাজতে দিয়ে দেয়া হয় এবং পরে তার জামিন মঞ্জুর করা হয়। আবার সবচেয়ে বয়োবৃদ্ধ হিসেবে পাওয়া যায় ৮৯ বছর বয়সী “মোহাম্মদ সাদিক” নামের একজন বন্দীর পরিচয়। তবে সে ২০০২ সালের অক্টোবর মাসেই আফগানিস্তানে স্থানান্তরিত হয়।
এবার জেনে নেয়া যাক বন্দীদের উপর চালানো নির্যাতনের কিছু লোমহর্ষক ঘটনা।
নির্যাতনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো, হাতকড়া পড়াবস্থায় চোখ বন্ধ করে দীর্ঘক্ষণ সময় দাঁড় করিয়ে রাখা, উলঙ্গ অবস্থায় মিলিটারি পুরুষ ও নারী সদস্যদের দ্বারা যৌন নির্যাতন, পানি খেতে না দেয়া, তীব্র আলোর ঝলকানি, তীব্র ঠাণ্ডা বরফে শুইয়ে রাখা, মুখে কাপড় বেঁধে অনবরত পানি ঢালা, হাত পায়ের নখ উপড়ে ফেলা, বেধড়ক পেটানো জ্ঞান না হারানো অবধি এবং তীক্ষ্ণ উচ্চমাত্রার শব্দ দ্বারা নির্যাতন করা।
গুয়ানতানামোর সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত কারাবন্দী মোহাম্মদ ওউলিদ সালেহী একজন মৌরিতানিয়ান নিবাসী যাকে কোন ধরণের অভিযোগ ছাড়াই কারাবরণ করতে হয় দীর্ঘ চৌদ্দ বছর। ২০১৫ সালে সে তার বেশি বিক্রিত বই “গুয়ানতানামো বে ডায়রি”তে ফুটিয়ে তুলেছিলেন কারাগারে নির্যাতন করার দৃশ্য। সে তুলে ধরেছে একজন নারী তদন্তকর্মী দ্বারা যৌন নির্যাতনের কথা। তাকে সমুদ্রে পাঠানোর জন্য বের করা হয় এবং জোর করে সাগরের মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ত পানি খাওয়ানো হয় যতক্ষণ না সে বমি করে এবং এরপর তাকে মুখে এবং পাঁজরে বেধড়ক মারধর করা হয় যখন তাকে বরফ খণ্ডে শুইয়ে রাখা হয় শরীরের ক্ষত লুকানোর জন্যে।
তার কারাজীবনের শেষ দিকে তাকে বাধ্য করা হয় মিথ্যে স্বীকারোক্তি দেয়ার জন্যে। কেন তাকে বন্দী করা হয়? এ ব্যাপারে তিনি লেখেন, ৯/১১ এর সন্ত্রাসী হামলাকারী সন্দেহে তাকে আটক করা হয় এবং অভিযোগ আনা হয় ১৯৯১ ও ৯২ সালে তিনি আফগানিস্তান ভ্রমণ করেছিলেন জঙ্গি প্রশিক্ষণ নেয়ার নিমিত্তে যদিও ঘটনা সম্পূর্ণ বানোয়াট। পরে তিনি মৌরিতানিয়ান প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ওউলিদ আবদেল আজিজকে ধন্যবাদ জানায় তাকে ঘরে ফিরিয়ে আনার জন্য।
তেমনই আরেক নির্দোষ বন্দী ছিলো সামী আল-হাজ। যিনি ছিলেন পেশাগত সাংবাদিক এবং ছয় বছর কারাভোগ করেন কোন ধরনের অপরাধ না করা সত্ত্বেও।
শোনা যায়, Classic Casio F-91W নামের একটি স্মার্ট ওয়াচ পড়ার অপরাধেও যেকেউ গুয়ানতানামোতে কারাবন্দী হতে পারে।
সময় ২০০৭ ফেব্রুয়ারির। “তারিক বা ওদাহ” নামক এক বন্দী খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করে দেন এবং প্রায় এক দশক যাবত জোরপূর্বক তাকে খাওয়ানো হতো। শেষমেশ ১৬ এপ্রিল, ২০১৬ সালে তাকে সৌদি আরবের জিম্মায় দিয়ে দেয়া হয়। ১০০ জনের মধ্যে ২১ জনকে এভাবে জোরপূর্বক নাকে পাইপ ঢুকিয়ে খাদ্য নির্যাস খাওয়ানো হতো যা পরবর্তীতে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে যার কারণ হিসেবে আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশন জানায়,
“প্রতিটি সামর্থ্যবান রোগীর অধিকার রয়েছে চিকিৎসা সেবা গ্রহণে অসম্মতি প্রকাশ করার। যদি তা জীবন ব্যবস্থা বজায় রাখার জন্যে হয় তবুও।”
আরে কারাবন্দী সামির নাজি আল হাসান মকবেল এমন জোরপূর্বক পদক্ষেপের ব্যাপারে বর্ণনা দেন এভাবে,
“আমি কখনোও ভুলতে পারবো না যখন তারা আমার নাকের মধ্যে দিয়ে জোরপূর্বক খাওয়ানোর চেষ্টা করে। কতোটা যন্ত্রণাদায়ক ছিলো তা বলা সম্ভব নয় যখন তারা নাক দিয়ে কিছু জোরপূর্বক দিতো। তখন আমার মনে হতো সব ছুঁড়ে ফেলি।”
অনশনের কারণ যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায়, গুয়ানতানামোর রয়ে যাওয়া বন্দীর মধ্যে প্রায় ৮৬ জনকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু তারা ছাড়া পায় নি বলে অনশনের সৃষ্টি হয়।
আরেক ঘটনা ছিলো এক আমেরিকান মিলিটারি পুলিশের, নাম ছিলো “সিন বেকার”। একদিন তাকে আদেশ দেয়া হলো বন্দীর সাজে সজ্জিত হওয়ার, যাতে আমেরিকান সৈন্যরা অনুশীলন করতে পারে কিভাবে কাজে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী বন্দীকে আলাদা করে নিষ্ক্রিয় করা যায়। নির্দেশনা অনুযায়ী বেকার বন্দীদের কমলা রঙের স্যুট গায়ের উপর পরিধান করে। তবে দুর্ঘটনাবশত কারাগারের নিরাপত্তায় নিয়োজিত এক দাঙ্গা পুলিশ সদস্য তাকে সত্যিকারের বন্দী মনে করে যে পূর্বে একজন অফিসারকে অপমানিত করে।
WLEX নামের এক টিভি স্টেশনকে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি জানান, ওই মুহূর্তে তাকে মারাত্মকভাবে মেরে জখম করা হয় এবং তাকে মাথা জোরে আঁচড়ে ফেলা হয় হয় লোহা দ্বারা নির্মিত মেঝের উপর যার ফলে সে নিশ্বাস নিতে অক্ষম হয়ে পড়েছিলেন। প্র্যাকটিস সেশন বন্ধ করতে “Red” নামের একটি কোড ওয়ার্ড ব্যবহার করা হতো, বেকার বারবার তা চিৎকার করে বলতে লাগলো কিন্তু বিধিবাম, তাকে তখনোও মাথা চেপে ধরে বেধড়ক পেটানো হচ্ছিলো এবং গলা টিপে ধরা হয়েছিলো। শেষমেশ অনেক কষ্টে কমলা রঙের স্যুটটা খুলে ফেলার পর তাকে চিনতে পেরে মারধর বন্ধ হয়। বেকারকে মিলিটারি হসপিটালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় এবং ২ সপ্তাহ ছুটি সহকারে ৬ দিন টানা চিকিৎসা দেয়া হয়। জখম এতোটাই গভীর ছিলো যা ট্রমাটিক ব্রেন ইনজুরিতে পরিণত হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাকে ওয়াল্টার রিড আর্মি মেডিকেল সেন্টারে নেয়া হয়।
বন্দীদের প্রায় সবাই হলো মুসলিম যার কারণে কারাগারে তাদের জন্য এক কপি কোরআন, একটি দাবা বোর্ড এবং পশ্চিমে মক্কার দিক নির্দেশনা সম্বলিত একটি কম্পাস দেয়া হয়।
মর্ত্যের এই নরকের পিছে আমেরিকান সরকার খরচ করে বিশাল অঙ্কের টাকা। ১৯৬৪ সালে কিউবান প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোর নির্দেশ মতে গুয়ানতানামোতে পানি এবং রশদ সরবরাহের সংযোগ কেটে দেয়া হয় যাতে আমেরিকান সরকার এই কারাগার নির্মাণে অনুৎসাহিত হয়ে পিছিয়ে যায়। তবে তারা নিজেদের (আমেরিকা) উদ্যোগে এটমিক প্লান্ট এবং পানির ব্যবস্থা করে নেয়। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, প্রতিজন বন্দীর জন্যে বাৎসরিক ৮ লাখ ডলার খরচ করে আমেরিকান সরকার। বন্দীদের জন্য একটি ফুটবল মাঠ বানাতে খরচ করা হয় সাড়ে ৭ লাখ ডলার। ইতিমধ্যে ৩৫ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রোজেক্ট হাতে নেয়া হয় যাতে ফাইবার অপটিক কেবল স্টেশন বানানো হয় ফ্লোরিডা থেকে গুয়ানতানামো পর্যন্ত ইন্টারনেট সংযোগ এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার লক্ষ্যে।
আমেরিকা ব্যতীত বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় তুলেছে এই গুয়ানতানামো কারাগার। বন্দীদের উপর চালানো নির্যাতন যেনো ছাপিয়ে যায় হিংস্রতার মাত্রাকে। প্রতিটা মানুষের আছে বেঁচে থাকার অধিকার তাই মন থেকে আশা করা যায় যেনো অচিরেই বন্ধ হয়ে যায় বন্দী করার নামে পরিচালিত এই কুখ্যাত নরক যেখানে বিচারের নামে বর্বরতা চালানো হয় নিরপরাধ মানুষের উপর।
п»їbest mexican online pharmacies Mexican Pharmacy Online mexican mail order pharmacies
medicine in mexico pharmacies reputable mexican pharmacies online mexico drug stores pharmacies
http://indiaph24.store/# indian pharmacies safe
http://indiaph24.store/# reputable indian online pharmacy
mexican border pharmacies shipping to usa Mexican Pharmacy Online mexico pharmacies prescription drugs
mexican rx online: Online Pharmacies in Mexico – best online pharmacies in mexico
http://mexicoph24.life/# mexico pharmacy
mexico pharmacies prescription drugs mexico drug stores pharmacies mexican rx online
http://canadaph24.pro/# canadian pharmacy king reviews
http://canadaph24.pro/# canadian drugs pharmacy
best india pharmacy Generic Medicine India to USA india pharmacy mail order
pharmacy website india indianpharmacy com online shopping pharmacy india
india pharmacy mail order: indian pharmacy – online shopping pharmacy india
india pharmacy mail order Online medicine home delivery best online pharmacy india
http://indiaph24.store/# buy prescription drugs from india
online canadian pharmacy review canadian pharmacies canadian pharmacy 365
https://canadaph24.pro/# cheap canadian pharmacy online
best canadian pharmacy: Certified Canadian Pharmacies – canadapharmacyonline com
п»їbest mexican online pharmacies mexican pharmacy mexican border pharmacies shipping to usa
http://mexicoph24.life/# pharmacies in mexico that ship to usa
http://canadaph24.pro/# canadian pharmacy meds review
thecanadianpharmacy Certified Canadian Pharmacies best canadian pharmacy
https://canadaph24.pro/# buying drugs from canada
http://mexicoph24.life/# mexican pharmaceuticals online
india pharmacy mail order: indian pharmacy fast delivery – online shopping pharmacy india
canadian pharmacy Licensed Canadian Pharmacy buy prescription drugs from canada cheap
http://canadaph24.pro/# canadian pharmacy world reviews
mexican rx online Mexican Pharmacy Online buying prescription drugs in mexico
buying from online mexican pharmacy mexican pharmacy mexican online pharmacies prescription drugs
online pharmacy india Cheapest online pharmacy online pharmacy india
http://mexicoph24.life/# pharmacies in mexico that ship to usa
my canadian pharmacy Certified Canadian Pharmacies safe canadian pharmacy
http://indiaph24.store/# top online pharmacy india