মানুষ স্বভাবতই সবচেয়ে দ্রুত গতির জিনিষটিই পছন্দ করে। যেমন, আমরা যানবাহন, কম্পিউটার বা ইন্টারনেট সংযোগ হিসেবে প্রতিক্ষেত্রে সবচেয়ে দ্রুতগতির জিনিষটিই বেছে নিই। প্রাণীজগতের ক্ষেত্রেও কিন্তু এর ব্যতিক্রম নয়।
হয়তোবা সময়-বিশেষে আপনার বিস্ময়ের কারণ হতে পারে একটি প্রশ্ন। প্রাণীজগতে সেরা গতির অর্থ কি? কি সুবিধা এই দ্রুততম গতির অধিকারী হয়ে? বেশিরভাগ সময়, শিকার হল সেরা গতির মূল অর্জন। কিন্তু সকল ক্ষেত্রে তা নয়। আজ আমরা কথা বলবো সে সকল ১০ টি দ্রুততম প্রাণীদের নিয়ে যারা তাদের গতির মাধ্যমে বিশ্ব মাতিয়ে রেখেছে।
১০. অনাজার/ওনাজার (Onager):
তালিকায় দশম স্থানে আছে অনাজার নামক প্রাণীটি। অনাজার ছাড়াও এরা হেমোয়ান বা এশিয়াটিক বন্য গাধা নামে পরিচিত। ১৭৭৫ সালে জার্মান প্রাণিবিদ্যা-বিদ পিটার সাইমন প্যালাস অনাজার পরানিটির দ্বিপদীয় নামকরণ করেন। এর দ্বিপদীয় নাম হল Equus hemionus onager। মজার ব্যাপার হল, প্রাণীটি দেখতে অনেকটা গাধা এবং ঘোড়ার মাঝামাঝি পর্যায়ের। এটি গাধা থেকে ২৯০ কিলোগ্রাম ও ২.১ মিটার ( মাথা থেকে দেহের উচ্চতা) বড় এবং দেখতে অনেকটা ঘোড়ার ন্যায়। এদের পা ঘোড়া অপেক্ষা ছোট। অনাজার এর বর্ণ ঋতুভেদে ভিন্ন অর্থাৎ এক এক ঋতুতে এদের বর্ণ এক এক রূপ ধারণ করে। এটি প্রতি ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার বেগে দৌড়াতে সক্ষম।
৯. ঘোড়া (Horse):
এই প্রাণীটির সাথে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার মতো কিছুই নেই। ছোট-বড় আমরা সবাই জানি এটি দ্রুত প্রাণীদের মধ্যে একটি। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী, ২০০৮ সালে গ্র্যান্টভিল এর পেনসিলভানিয়াতে অনুষ্ঠিত ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় ‘উইনিং ব্রিউ’ নামক একটি ঘোড়া রেস হর্স হিসেবে সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন (ঘণ্টায় ৭০.৭৬ কিলোমিটার) ঘোড়ার পদক অর্জন করে। সেক্ষেত্রে অনেকেই অবাক হতে পারেন যে, ঘোড়া এই তালিকায়
৯ম স্থানে কেন? আশ্চর্য হবার কিছুই নেই কেননা পৃথিবীতে এমন অনেক প্রাণী আছে যা ঘোড়া থেকে অধিক দ্রুত।
৮. ক্যাঙ্গারু(Kangaroo):
আমরা সকলেই ক্যাঙ্গারু কমবেশি চিনি। কার্টুন বা জিওগ্রাফিক চ্যানেল হয়তো দেখেছি, বিশেষ করে বাচ্চাদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। কিন্ত আমরা কি জানি যে এটি পৃথিবীর দ্রুততম প্রাণীর একটি? অনেকেই হয়তো অবাক হয়েছেন শুনে কিন্তু এটি সম্পূর্ণ সত্যি। ক্যাঙ্গারু একমাত্র বৃহৎ প্রাণী যে লাফানোকে তার গতিশক্তিতে পরিণত করে। লাল ক্যাঙ্গারু আরাম এর সহিত প্রতি ঘণ্টায় ৭১ কিলোমিটার বেগে লাফিয়ে চলাচল করতে পারে। ব্যাপাটা মজার না? আসুন আরোকিছু মজার ব্যাপার আবিষ্কার করি।
৭. আফ্রিকান বন্য কুকুর (African Wild Dog):
আফ্রিকান বন্য কুকুর একটি মাংসাশী স্তন্যপায়ী প্রাণী। আফ্রিকায়, বিশেষ করে সাভানাস এবং অন্যান্য হালকা বৃক্ষ-পূর্ণ এলাকায় এদের পাওয়া যায়। এদের বন্য কুকুর ছাড়াও আরও একাধিক নামে ডাকা হয়, যেমন – ‘দি পেইন্টেড হান্টিং ডগ’ ‘আফ্রিকান হান্টিং ডগ’ ‘দি কেপ হান্টিং ডগ’ ‘দি স্পটেড ডগ’ ইত্যাদি।
এরা সাধারণত তাদের ধূর্ত স্বভাব এবং দ্রুত গতিকে কাজে লাগিয়ে শিকার ধরে থাকে। তবে এদের শিকার করার নিয়ম আলাদা। তারা দল বেঁধে শিকার করে থাকে। সাধারণত তারা মাঝারী আকারের শিকারকে টার্গেট করে তারপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এভাবে এই কুকুরেরা ওয়াইল্ড বিস্টদেরও মেরে ফেলে। এরা প্রতি ঘণ্টায় ৭১ কিলোমিটার বেগে দৌড়াতে সক্ষম।
৬. বাদামী খরগোশ (Brown Hare):
ছোট বলে কিন্তু খরগোশকে মোটেও উপেক্ষা করা উচিত নয় কেননা তারা খুবই দ্রুত দৌড়াতে সক্ষম। এছাড়া, একটি খরগোশ একজন অলিম্পিক স্প্রিন্টার থেকেও দ্বিগুণ গতিতে দৌড়াতে সক্ষম। খরগোশ এর প্রজাতির মধ্যে ইউরোপিয়ান বাদামী খরগোশ সবচেয়ে দ্রুত দৌড়াতে পারে। এরা প্রতি ঘণ্টায় সর্ব্বোচ ৭২ কিলোমিটার বেগ অর্জন করতে পারে যা এদের শত্রুর হাত থেকে বাঁচায়।
৫. ব্লাকবাক (Blackbuck):
এর সাথে আমরা বেশিরভাগই অপরিচিত। এটি মূলত দেখতে অনেকটা হরিণ এর মতো। এই সুদর্শন লম্বা শিং-যুক্ত প্রাণীদের ভারত, পাকিস্তান এবং নেপাল পাওয়া যায়। এরা লাফিয়ে চলাচল করে থাকে এবং অন্যসকল লাফিয়ে চলাচল করা প্রাণীদের মধ্যে এদের গতি অনেক বেশি। প্রতি ঘণ্টায় এরা ৮০ কিলোমিটার বেগে লাফিয়ে যেতে পারে। এদের জীবদ্দশায় এরা সাধারণত ১০ থেকে ১৫ বছর বেচে থাকে।
৪. নু-হরিণ (Wildebeest):
নু-হরিণ তাদের নতুন চারণভূমিতে বার্ষিক স্থানান্তরের জন্য পরিচিত। এদের বসবাস টাজানিয়া জঙ্গলে। প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ নু-হরিণ একসাথে নদী পারাপার করে তাদের নতুন চারণভূমিতে যায়, বিভিন্ন বন্যপ্রাণী সম্পর্কিত তথ্যচিত্রে এই ঘটনাটি প্রচার করা হয়। এরা সর্ব্বোচ ৮০.৫ কিলোমিটার বেগে দৌড়াতে পারে। এদের এই ছুটতে পারার ক্ষমতাই কিন্তু বিভিন্ন প্রাণীর হাত থেকে এদেরকে রক্ষা করে। কারণ বাঘ এবং সিংহ আবার ওয়াইল্ড বিস্ট খেতে দারুণ পছন্দ করে।
৩. প্রোঙ্গহর্ন (Pronghorn):
বিশ্বে ভূমিস্ত স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততম হল প্রোঙ্গহর্ন। এরা অনেক দ্রুত গতির হওয়ার ফলে শিকার এর ক্ষেত্রে অনেক প্রাণীকেই ছল করে ফেলতে পারে যা এদের শিকারে সাহায্য করে। বড় হার্ট এবং ফুসফুসের কারণে তাদের দম থাকে বেশি। এ কারণেই অন্যান্য প্রাণীদের থেকে বেশি সময় এরা তাদের এই বেগ ধরে রাখতে পারে। এই হরিণগুলো লাফ দেবার ব্যাপারে বেশ কাচা। ঠিক মতো লাফ দিতে পারে না এরা। এই সুদর্শন শিং যুক্ত প্রাণী প্রতি ঘণ্টায় ৮৮.৫ কিলোমিটার বেগে দৌড়াতে পারে।
২. স্প্রিংবক (Springbok):
স্প্রিংবক এক ধরনের মাঝারি আকৃতির, বাদামী এবং সাদা বর্ণ-মিশ্রিত হরিণ। দক্ষিণপূর্ব আফ্রিকায় এদের দেখা যায়। লম্বা শিং ও সুদর্শন রূপের এই প্রজাতি অনেক দ্রুত গতির অধিকারী। প্রতি ঘণ্টায় এরা ১০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম। এছাড়াও, এরা বাতাসে ৪ মিটার লাফ দিয়ে ১৫ মিটার পর্যন্ত একটি অনুভূমিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারে।
১. চিতাবাঘ (Cheetah):
যদি আপনাকে জিজ্ঞেস করা হয়, বিশ্বে সকল ভূমিস্থ প্রানীদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততম কে? সর্বপ্রথম যে প্রানীটির নাম আপনার মাথায় আসবে তা হলো চিতাবাঘ। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন। চিতাবাঘ হলো পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুততম প্রানী। এর বৈজ্ঞানিক নাম অ্যানিনোনিক্স জুবাটাস। চিন্তা করে দেখুন তো, একটা প্রাণী ঘন্টায় ১১৫ কিলোমিটার বেগে দৌড়ে যাচ্ছে! এত জোরে যদি কোনো গাড়ি চালানো হয়, তো সেটা অ্যাক্সিডেন্ট করবে নিশ্চিত। তবে চিতা বাঘ কিন্তু অ্যাক্সিডেন্ট করে না। ব্যাপারটা বেশ মজার তাই না! গাড়ির সাথে তুলনা করে আরো বলা যায়, আমরা যখন গাড়ির ইঞ্জিন শুরু করি তখন গাড়িটি ধীরে ধীরে বেগ প্রাপ্ত হয়, কিন্তু চিতাবাঘ ৩ সেকেন্ড এর মধ্যে ১১৫ কিলোমিটার বেগে দৌডাতে শুরু করে অর্থাৎ তাৎক্ষনিক বেগপ্রাপ্ত হয়। চিতাবাঘ দ্রুত বেগে দৌড়াতে পারে তাই শিকারে এ প্রজাতির বেশ নাম রয়েছে।
rybelsus 14mg cheap – purchase glucovance for sale buy generic DDAVP
zofran cardiac effects
zyprexa in elderly
wellbutrin feeling depressed