সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন মি. ৩৬০ নামে খ্যাত সাউথ আফ্রিকান বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্স । তার ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজে পোস্ট করা এক ভিডিওতে তিনি জানান তিনি সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে চলেছেন ।
মাঠের সবদিকে শট খেলতে পারা এই খেলোয়াড় অসাধারন একজন উইকেট কিপার এবং ফিল্ডারও বটে ।
তার নেতৃত্বেই ২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে উঠে সাউথ আফ্রিকা । আজকের লেখাটিতে এবি ডি ভিলিয়ার্স সম্পর্কে কিছু তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরবো ।
১. শৈশব
সম্পুর্ন নাম আব্রাহাম বেঞ্জামিন ডি ভিলিয়ার্স । তিনি ১৯৮৪ সালের ১৭ই ফেব্রুইয়ারী সাউথ আফ্রিকার প্রেটোরিয়াতে জন্ম গ্রহন করেন ।
তিনি প্রেটোরিয়ার পাবলিক স্কুলে তার পড়াশোনা শুরু করেন তার স্কুলের নাম ছিল “Afrikaanse Hoër Seunskool” (আফ্রিকান্স বয়েজ হাই স্কুল) সাউথ আফ্রিকান জাতীয় ক্রিকেট দলের আরো দুজন ক্রিকেটার এই স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছিলেন তারা হচ্ছেন জ্যাক রুডলফ এবং ফাফ ডু প্লেসিস । ফাফ ডু প্লেসিস ডি ভিলিয়ার্সের সহপাঠী ছিলেন।
২. তিনি বেশ কয়েকটি ডাকনামে পরিচিত
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এবং বিভিন্ন দেশের টি-টুয়েন্টি লীগগুলোর কল্যানে ক্রিকেট খেলা দেশগুলোতে ডি ভিলিয়ার্স জনপ্রিয় একজন ক্রিকেটার ।
রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গুলুরুর হয়ে যখন তাদের হোম গ্রাউন্ডে ব্যাট করতে নামেন তখন এ বি ডি , এ বি ডি এই নামটির গর্জন শোনা যায় গ্যালারি থেকে এটা ছাড়া তিনি আরো কয়েকটি যডাকনামে পরিচিত সেগুলো হচ্ছে এবি, মিঃ ৩৬০ এবং সুপারম্যান ।
৩.খেলার ধরন
এবি ডি ভিলিয়ার্স একজন ডানহাতি ব্যাটসম্যান এবং মাঠের সবদিকে শটস খেলতে পারার কারণে তাকে মি.৩৬০ ডাকনামে সম্বোধন করা হয় ।তার ব্যাটিং সফলতার উৎস হিসেবে ধরা হয় তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিং স্টাইল এবং অসাধারন টাইমিং কে । এবি নিজ উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগিয়ে অদ্ভুত কিন্তু অসাধারন সব শট খেলে বল মাঠের বাইরে পাঠানোর জন্যে ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে জনপ্রিয় ।
এবি এমন একজন ব্যাটসম্যান যিনি চাইলে একজন ফাস্ট বোলারের বলে সুইপ শটে ছক্কা মারতে পারেন । অসাধারন একজন ব্যাটসম্যান হওয়ার পাশাপাশি তার অসাধারন উইকেট কিপিং এবং ফিল্ডিং এর জন্যেও ক্রিকেটপ্রেমীরা তাকে আজীবন মনে রাখবেন । পার্ট টাইম বোলার হিসেবে হাত ঘুরিয়েও উইকেট পেয়েছেন এবি। ওয়ানডে ম্যাচে তার সেরা বোলিং ফিগার ২/১৫ ।
৪. পড়াশোনায় মেধাবী ছিলেন
ক্রিকেট প্রেমীরা এবি ডি ভিলিয়ার্স কে তার ক্রিকেটের মাঠের পারফর্ম্যান্সের জন্যে চিনে থাকলেও তিনি পড়াশোনায়ও অত্যন্ত ভালো ছিলেন। এবি স্কুলে থাকাকালীন সময়ে জাতীয় সায়েন্স প্রতিযোগিতায় প্রথমস্থান অধিকার করার বদৌলতে তৎকালীন সাউথ আফ্রিকান প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার হাত থেকে স্বর্ন পদক লাভ করেন । এবি ডি ভিলিয়ার্স তার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান তার স্বপ্ন ছিলো তিনি মেডিসিন বিষয়ে পড়াশোনা করে একজন ভাল ডাক্তার হবেন ।
৫. ক্রিকেট জীবনের শুরু এবং প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে অভিষেক
এবি ডি ভিলিয়ার্স ২০০২ সালে সাউথ আফ্রিকার অনুর্ধ ১৯ জাতীয় দলে ডাক পান এবং এর রেই তিনি জনপ্রিয় সাউথ আফ্রিকান ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট ক্ল্যাব টাইটান্সের হয়ে ঘরোয়া লীগে নিয়মিত খেলা শুরু করেন । টাইটান্সের হয়ে ২০০৩ সালে তার অভিষেক ম্যাচের প্রথম ইনিংসে তিনি ৫৮ রান এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৬১ রান করে চমৎকার একটি অবিষেকের মাধ্যমে ঘরোয়া লীগ শুরু করেন । দেশের বাইরেও তিনি প্রথম শ্রেনীর ঘরোয়া লীগে খেলেছিলেন।
তিনি ২০০৪ সালে নর্দান আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেট ক্ল্যাব ক্যারিকফার্গুসের হয়ে বিদেশি কোটার খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছিলেন ।
৬.আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিষেক
ঘরোয়া লীগে ভালো পারফর্ম্যান্সের সুবাদে জাতীয় দলে ডাক পান এবি ডি ভিলিয়ার্স এবং তার টেস্ট অভিষেক ঘটে পোর্ট এলিযাবেথ মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে । অভিষেকে তেমন ব্যাট হাতে তেমন ভালো কিছু করতে পারেননি এবি । তার সাথে একই ম্যাচে টেস্ট অভিষেক হয় সাউথ আফ্রিকান ফাস্ট বোলার ডেল স্টেইনের ।
৭.প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি
অভিষেকের ৩ ম্যাচ পরে ডি ভিলিয়ার্স তার প্রথম শতক হাকান ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে । সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত হওয়া ম্যাচটিতে তিনি ১৬৯ বলে ১০৪ রান করেছিলেন ।
৮. ভালো মন্দের ২০০৭ ক্রিকেট বিশ্বকাপ
২০০৭ সালের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপটি ছিলো ডি ভিলিয়ার্সের জন্যে চড়াই উৎরায়ের একটি বিশ্বকাপ । টুর্নামেন্টের শুরুতে টানা ৪ বার ০ রানে আউট হয়ে তিনি কুখ্যাত এক রেকর্ডের ভাগীদার হয়ে যান (এক সিরিজে সর্বোচ্চবার ০ রানে আউট হওয়ার রেকর্ড) জাতীয় দলে তার জায়গা তখন নড়বড়ে ।
সমালোচকরা তার জাতীয় দলের স্থান নিয়ে যখন প্রশ্ন তোলা শুরা করেছিলো । এরপরে সে বিশ্বকাপেই নিন্দুকদের মুখে তালা লাগিয়ে দিয়ে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার প্রথম ওডিআই সেঞ্চুরি করেন (১৪৬ রান ১৩০ বলে)
৯. ইন্ডিয়ার বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি এবং লর্ডসে বুক চেতিয়ে লড়ে যাওয়ার গল্প
২০০৮ সালে সাউথ আফ্রিকার ভারত সফরে প্রথম সাউথ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি ইন্ডিয়ার বিপক্ষে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি হাকান । তিনি ২১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন সে ইনিংসে ।
একই বছর আরেক টেস্ট ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লিডসে প্রতিকুল পরিস্থিতিতে মাঠের দর্শকদের তীব্র স্লেজিং এর স্বীকার হওয়া সত্ত্বেও বুক চেতিয়ে খেলেন ১৭৪ রানের একটি ইনিংস ঐ টেস্ট ম্যচের দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৭ রান করে আউট হন, মাত্র ৩ রানের জন্যে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে সেঞ্চুরি মিস করেন তিনি।
১০. টেস্ট ০ রানে আউট না হয়ে সর্বাধিক ইনিংস খেলার রেকর্ড
৪৭ টি টেস্ট খেলার পরেও একবার ০ রানে ডি ভিলিয়ার্স কে কোনো বোলার আউট করতে পারেননি। তার ক্যারিয়ারের ৪৮ তম টেস্ট ম্যাচের ৭৯ তম ইনিংসে বাংলাদেশের বিপক্ষে রান আউট হয়ে তার এ যাত্রা থামে । এটা একটি বিশ্ব রেকর্ড ।
১১. এক ওডিআই ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কা হাকানোর রেকর্ড
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডের এক ম্যাচে সর্বাধিক ছক্কা মারার রেকর্ডটি হাঁকান এবি ডি ভিলিয়ার্স । ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার স্মরনীয় ১৪৯ রান নেওয়ার পথে তিনি ১৬টি ছক্কা মারেন । ডি ভিলিয়ার্স ছাড়াও এক ওডিআই ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কা (১৬টি) মারার রেকর্ড রয়েছি রোহিত শর্মা এবং ক্রিস গেইলের ।
১২. বিশ্বকাপে সর্বাধিক ছক্কা মারার রেকর্ড
৫০ ওভারের বিশ্বকাপে সর্বাধিক ছক্কা মারার রেকর্ডটি রয়েছে এবি ডি ভিলিয়ার্সের নামের পাশে । ক্রিস গেইলের পাশাপাশি এই রেকর্ডটির অংশিদার তিনি ।
তাদের দুজনেরই ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে নিজেদের নামের পাশে ৩৭টি ছক্কা রয়েছে । ডি ভিলিয়ার্স ২০১৫ বিশ্বকাপে ২১ টি ছক্কা হাঁকান ।
১৩. দ্রুত গতির হাফ সেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরি ও ১৫০
ওডিআই ক্রিকেটে সবচেয়ে কম বলে সেঞ্চুরি (৩১ বলে)করার রেকর্ডটির মালিক এবি ডি ভিলিয়ার্স এমনকি সবচেয়ে কম বলে হাফ সেঞ্চুরি (১৬ বলে) এবং ১৫০ (৬৪ বলে) রান করার রেকর্ডটিও তার ।
১৪. এক বছরে ৫০টি ছক্কা
২০১৫ সালে ওয়াঙ্খেডেতে ভারতের বিপক্ষে ৬১ বলে ১১৯ রানের ইনিংসটি খেলার পথে এক বছরে ৫০টি ছক্কা মারার রেকর্ড করেন তিনি ।
২০১৫ সালে ৫০টি ছক্কা মেরে শহীদ আফ্রিদির ১৩ বছর পুরোনো এক বছরে সর্বোচ্চ ছক্কা (৪৮টি) মারার রেকর্ড ভাঙেন তিনি ।
১৫. আইসিসির বর্ষসেরা খেলোয়াড়
এবি ডি ভিলিয়ার্স ৩ বার আইসিসির বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের অ্যাওয়ার্ডলাভ করেন ।
এ অ্যাওয়ার্ডটি তিনি প্রথমবার ২০১০ সালে বাকি দুবার পান ২০১৪ ও ২০১৫ সালে ।
lamisil price – griseofulvin online buy griseofulvin online cheap
generic rybelsus 14 mg – buy semaglutide 14 mg generic order DDAVP spray