প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে সবাইকে অনেক মানুষের সাথে কাজ করতে হয়, দিনের পর দিন কাজের মাধ্যমে অনেক সহকর্মীর সাথে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। ভালো পরিবেশে, আনন্দের সাথে এবং বেশি বেশি কাজ করার স্বার্থে কর্মক্ষেত্রে ভালো সহকর্মী খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য কর্মক্ষেত্রে বন্ধু তৈরি খুবই জরুরী। বিশ্বস্ত সহকর্মী সফল ক্যারিয়ার গঠনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু যদি কখনো কোনো সহকর্মীর সাথে কাজ করতে অস্বস্তিবোধ করেন তাহলে সারাদিনের ব্যস্ত সময়সূচির মধ্যে অনেক বেশি চাপ অনুভব করবেন। তাই আপনি যদি কর্মক্ষেত্রে বিশ্বস্ত কোনো সহকর্মী বা বন্ধু বেছে নিতে চান, তাহলে তাদের কিছু লক্ষণ খেয়াল করবেন। যে লক্ষণগুলো থাকলে সেই সহকর্মীকে কখনো বিশ্বাস করবেন না সেগুলো দেখে নিন।
সহকর্মী যদি সঙ্গ দেওয়ার চেয়ে নিজের সাফল্য নিয়ে বেশি মগ্ন থাকেন
কর্মক্ষেত্রে সবাই নিজেদের সাফল্য নিয়ে ভেবে থাকেন, তবে যদি আপনার কো্নো সহকর্মীর সাথে একই সাথে কাজ করার সময় যদি লক্ষ্য করেন তিনি নিজের সময় এবং নিজের কার্যোদ্ধার নিয়ে বেশি ব্যস্ত তাহলে সেটা খুবই খারাপ লক্ষণ। এ ধরনের সহকর্মীদের কখনোই বিশ্বাসযোগ্য নয়। উদ্যোক্তা এবং জীবন বিষয়ক অভিজ্ঞ ম্যারিয়ন স্কিট বলেন, “আমেরিকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রূঢ় ব্যক্তিবাদের উপর নির্ভর করে। অনেক দিন যাবত আমরা সমাজে এটা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি হতে দেখেছি। চাকরি ক্ষেত্রে কারো সম্পর্ক খারাপ হলে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পায়, ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করা হয় এবং এর ফলে বিশ্বাস নষ্ট হয়।”
যৌথ কাজে কোনো সহকর্মী যদি সব কৃতিত্ব নিজের দাবি করেন
কর্মক্ষেত্রে অনেক সময় একসাথে দলীয় ভাবে ২ জন বা ৩-৪ জন কাজ করতে হয়। কিন্তু আপনার কোনো সহকর্মী যদি দলীয় কাজ নিজের একক কৃতিত্ব হিসেবে বলে বেড়ান এবং আপনার অবদানকে ছুঁড়ে ফেলে দেন তাহলে সেই সহকর্মী কখনোই বন্ধুভাবাপন্ন হতে পারেন না। আপনার সহকর্মী যে কাজটি নিজে সম্পন্ন করেননি অথবা আপনাকে সামান্য সাহায্য করেছেন মাত্র কিন্তু পুরো কৃতিত্ব তিনি নিজে দাবি করছেন সেটা আপনার এবং আপনার মেধার প্রতি অসম্মান। তাই এ ধরনের সহকর্মীকে এড়িয়ে চলাই ভালো। মনোবিদ নিকি মার্টিনেজ এ বিষয়ে বলেন, “যখন আপনার সহকর্মী আপনার ব্যক্তিগত বা যৌথ চিন্তা-ভাবনাকে নিজের বলে উপস্থাপন করেন সেটি আপনার প্রতি তার লাল ঝান্ডা।”
যদি আপনার সহকর্মী অফিসে পরচর্চা করেন
আপনার অফিসের কোনো সহকর্মী যদি অফিসের অন্যদের পরচর্চা আপনার সামনে করেন। তাহলে মনে রাখবেন, আপনার অগোচরে আপনার পরচর্চাও তিনি অন্যদের সাথে করেন। তাই এ ধরনের সহকর্মীকে কখনোই বিশ্বাস করবেন না। ম্যারিয়ন স্কিট বলেন, “এটা উন্মোচিত সত্য যে, যদি কেউ কারো গোপন দিকগুলো আপনার সামনে ফাঁস করে আপনার গোপন দিকগুলো জানার চেষ্টা করেন, তাহলে মনে রাখবেন তিনি আপনার গোপন বিষয়গুলোও অন্যদের কাছে প্রকাশ করবে। কোনো সন্দেহ নেই যে, একজন সৎ এবং বিশ্বস্ত সহকর্মীর গুরুত্ব অনেক কিন্তু কারও পরচর্চা যেমন গোপনীয়তা এবং বিশ্বস্ততা নষ্ট করে এবং যিনি এটা করেন সে কখনো বিশ্বস্ত হতে পারেন না।”
যদি কোনো সহকর্মী সর্বদা আপনার বসকে তোষামোদ করেন
কর্মক্ষেত্রে কোনো কোনো সহকর্মী সবসময় বসকে তোষামোদ করে যান। যদি আপনারা সবাই একত্রে কোনো কাজ করার পরও আপনার কোনো সহকর্মী আপনাদেরকে ছাপিয়ে নিজের জন্য বসকে তোষামোদ করেন। তাহলে এ ধরনের সহকর্মীকে কখনো বিশ্বাস করবেন না। কর্মক্ষেত্রে নেটওয়ার্কিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এ ধরনের সহকর্মীদের নেটওয়ার্কিং থাকা পরবর্তীতে ক্ষতির কারণ হতে পারে। বসকে তোষামোদকে কেউ কেউ সোশ্যাল ক্লাইম্বিং বলে থাকেন, কেউ কেউ এটাকে ইতিবাচকভাবে দেখেন। তবে এ বিষয়ে স্কিট বলেন, “আপনি এটাকে যা খুশি বলতে পারেন, আমাদের মধ্যে অধিকাংশ এ বিষয়ে একমত যে, কোনো সহকর্মী যদি তার অন্য সহকর্মীদের সাথে সম্পর্কের বিনিময়ে কর্তৃপক্ষের সুবিধা অর্জন করতে চান তাহলে তাকে কখনোই বিশ্বাস করা উচিত নয়।”
যিনি ইতিমধ্যে কারো সম্মানহানি করেছেন
প্রত্যেক মানুষই ভুল করেন এবং একজন সহকর্মীর বিষয়ে কখনো আপনি কখনোই সবকিছু জানতে পারবেন না। আপনার কোনো সহকর্মীর সাথে কারো যদি সম্পর্ক খারাপ হয়ে থাকে সেটা আপনার থেকে সবচেয়ে ভালো জানেন যে, ২ জন মানুষের সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। তবে আপনার অফিসের কোনো সাবেক সহকর্মীর প্রতি যদি আপনার কোনো সহকর্মী সম্মান না দেখান, তাহলে আপনার সেই সহকর্মী কখনোই বিশ্বস্ত হতে পারেন না। আপনার কোনো সহকর্মী পূর্বে কারো সাথে ঝামেলা জড়িয়েছেন এবং কারো সম্মানহানি করেছেন, তার সাথে গভীর সম্পর্ক গড়ে না তোলাই ভালো। ম্যারিয়ন স্কিট বলেন, “যখন কেউ নিজেকে প্রতারক এবং খারাপ অভীষ্টের মানুষ হিসেবে প্রমাণ করেছেন, তখন তারা কর্মক্ষেত্রে প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেন। যেখানে নিজেকে অনেক সংবরণ করে রাখতে হয়। আর তাই সেখানে আদর্শভাবে কাজ করা সম্ভব হয় না।”
সহকর্মী যদি কোনো ধরনের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া মেনে নিতে না পারেন
যদি আপনি সফল হতে চান তাহলে আপনাকে আপনার দক্ষতার উন্নতি ঘটাতে হবে, আপনার কাজের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করতে হবে এবং যেকোনো ধরনের প্রতিক্রিয়াকে মেনে নিতে হবে। যদি আপনার কোনো সহকর্মী যেকোনো ধরনের সমালোচনার প্রতি অত্যধিক সংবেদনশীল হয় তবে সে তার ভুল বা ত্রুটিগুলির জন্য অন্য কাউকে দোষারোপ করতে পারে। এ ধরনের সহকর্মীকে কখনোই বিশ্বাস করা উচিত নয়।
যদি আপনাকে কেউ আলাদা ভাবেন
আপনার সহকর্মীদের সবার মাঝখানে যদি আপনাকে সবাই বা কেউ একজন আলাদাভাবে বা বিচ্ছিন্ন কেউ মনে করে তাহলে আপনাকে বিষয়টি খুব কষ্ট দিতে পারে। এ ধরনের সহকর্মীরা কখনোই বিশ্বাসযোগ্য নন। কারণ এদের কারণে আপনি কর্মক্ষেত্রে ভালোভাবে কাজ করতে পারবেন না এবং আপনার ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়বে। নিকি মার্টিনেজ বলেন, “যদি আপনি মনে করেন আপনার বস অথবা সহকর্মীরা আপনাকে বিশ্বাস করেন না, তাহলে আপনার মধ্যে কঠোর পরিশ্রম করা অনিচ্ছা তৈরি করবে। আপনি নিজেকে সহকর্মীদের মাঝে থেকে যখনই সম্ভব হবে বিচ্ছিন্ন করে রাখবেন এবং সবশেষে আপনি কর্মক্ষেত্রে ক্রমাগত অসুখী ভাববেন।”
আপনার সহকর্মী যদি পূর্বে মিথ্যা বলে ধরা পড়েন
ধরুন, আপনার সহকর্মী বলেছেন কোন জরুরী কাজের জন্য মিটিং মিস করেছেন কিন্তু আপনি তাকে অদূরে কোথাও লাঞ্চ করতে দেখেছেন। আবার আপনার কোন সহকর্মী পারিবারিক কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন কিন্তু আপনি তার ইন্সটাগ্রামে আনন্দময় সময় কাটানোর অসংখ্য ছবি দেখতে পেলেন। এগুলো অসততার প্রমাণ। হোক সেটা ছোট বা বড়, এগুলো পরিষ্কার নির্দেশনা আপনি অফিসের কোনো কাজে এ ধরনের সহকর্মীকে কখনোই বিশ্বাস করতে পারেন না। ম্যারিয়ন স্কিট এ বিষয়ে বলেন, “যদিও আমাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন যে, ‘সততা সর্বোত্তম পন্থা’ কিন্তু কর্মক্ষেত্রে দেখা যায় যে অধিকাংশ মানুষই অসৎ। সিনিকের মতবাদ থেকে জানা যায় যে কর্মক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষ অসৎ। এটা সত্য না মিথ্যা সেটা বিষয় না, যখন আপনার কোন সহকর্মী মিথ্যা বলে ধরা খেয়েছেন অথবা তিনি অভ্যাসগতভাবে মিথ্যুক হোন তাহলে একে অপরকে সন্দেহ করার কারণে পারস্পরিক আস্থা নষ্ট হয়।”
যিনি যেকোনো উপায়ে সেরা হতে চান
সামান্য সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা আপনার আত্মবিশ্বাসকে বৃদ্ধি করতে পারবে এবং আপনার পূর্বের সাফল্যকে অতিক্রম করতে পারে কিন্তু আপনার কোন সহকর্মী যদি আপনার সাথে ন্যায়-নীতিকে বর্জন করে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়, তাহলে তার সাথে প্রতিযোগিতা না করাই ভালো। বরং যিনি ন্যায়-নীতিকে পেছনে ফেলে যেকোনো উপায়ে সেরা হতে তার উপর আস্থা রাখা বা তাকে বিশ্বাস না করাই শ্রেয়। কারণ যখন আপনার কোন সহকর্মী যেকোনো উপায়ে নিজের সাফল্য কামনা করবেন বা নিজে সেরা হতে চাইবেন তখন অফিসে তিনি অরাজকতা সৃষ্টি হবে। তাই এ ধরনের মানুষদের এড়িয়ে চলা ভালো।
order prandin 2mg pills – order prandin 2mg generic buy jardiance for sale