টাকায় ৮ মণ চাল কথাটি শুনলেই আমাদের দৃশ্যপটে ভেসে উঠে বাংলার এক মহান শাসক সুবাদার শায়েস্তা খানের কথা। তার সম্পর্কে আমরা কতটুকুই বা জানি! শুধু কি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণেই তার কৃতিত্ব সীমাবদ্ধ? আসলে তা নয় প্রিয় পাঠক, আজ আপনাদের জানাব এই মহান শাসকের অপর এক কৃতিত্বের কথা।
সময় টা ১৭ শতাব্দীর প্রায় শেষ দিকে।
পর্তুগিজ হার্মাদ জলদস্যুদের অত্যাচারে জনজীবনে তখন নাভিশ্বাস উঠে গেছে। অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে, মানুষ এই জলদস্যুদের নাম শুনলেই যেন অজানা এক আতংকে কেপে উঠত।
তাদের ব্যাপারে আলোচনা শুরু করার পূর্বে তাদের সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া প্রয়োজন। চলুন পাঠক তাহলে জেনে আসা যাক ইতিহাসের এ দুর্ধর্ষ নাবিকদের সম্পর্কে।

ইউরোপীয়দের মধ্যে পর্তুগিজরাই প্রথম বাংলায় আগমন করে। ১৫ শতকের শুরু থেকেই তারা বাণিজ্যের জন্য দুঃসাহসিক সমুদ্রযাত্রা শুরু করে। ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে ভাস্কো ডা গামার কালিকটে পৌঁছার কয়েক দশক পরে বাংলায় পর্তুগিজদের আগমন ঘটে। পনেরো শতকের শেষ দিক হতেই এশিয়া থেকে মসলা আহরণের উদ্দেশ্যে ভেনিস ও আরব বণিকদের এড়িয়ে বিকল্প পথ অনুসরণের ফলেই এদেশে পর্তুগিজদের অনুপ্রবেশ ঘটে। ১৪৪৫ খ্রিস্টাব্দের দিকে হালকা দ্রুতগামী জাহাজের ব্যবহার এবং ১৪৫৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে অক্ষাংশ নির্ণয়ে কৌণিক উচ্চতা পরিমাপক যন্ত্র ব্যবহারে পর্তুগিজদের দক্ষতা তাদের সমুদ্রযাত্রায় যথেষ্ট সহায়তা করে এবং তাতে পৃষ্ঠপোষকতা করেন প্রিন্স হেনরি এবং পরবর্তীকালে রাজা দ্বিতীয় যোয়াও। কিন্তু ধীরে ধীরে এ জাতি পেশা হিসেবে দস্যুতা কে বেছে নেয়।
চট্টগ্রাম তখন আরাকান রাজের শাসনাধীনে ছিল। ১৬১৭খ্রিঃ আরাকান পর্তুগিজদের কাছ থেকে সন্দ্বীপ অধিকার করে নেন। এর ফলে ঢাকা পর্যন্ত মেঘনা অঞ্চলে লুটপাট করতে মগ জলদস্যুদের পক্ষে খুবই সুবিধা হয়। মগ ও ফিরিঙ্গি জলদস্যুরা হামার্দ নামে অভিহিত হত। এই জলদস্যুরা এতটাই হিংস্র ও বর্বর ছিল যে বহু বাঙ্গালী নারী, পুরুষ ও শিশুকে বলপূর্বক ধরে চট্টগ্রাম ও সন্দীপে নিয়ে যেত। কথিত আছে যে, জলদস্যুরা তাদের হাতে ছিদ্র করে তার মধ্যে দিয়ে বেত ঢুকিয়ে অনেককে একসঙ্গে বেধে নৌকার পাটাতনের নিচে ফেলে রাখত- প্রতিদিন উপর থেকে কিছু চাল তাদের আহারের জন্য ফেলে দিত। এছাড়াও এই জলদস্যুরা এদেরকে দাসরূপে ইউরোপীয় বনিকদের কাছে বিক্রি করত এবং ইউরোপীয় বনিকেরা পণ্য হিসেবে বিভিন্ন দেশে পাঠাত। মগেরা অনেককেই আরাকানে নিয়ে যেত এবং ক্রীতদাস ও ক্রীতদাসীর মত ব্যবহার করত। এরকম হাজারো অত্যাচারে অতিষ্ঠ জনগণের দীর্ঘশ্বাসে চট্টগ্রামের আকাশ বাতাস যেন ভারী হয়ে উঠেছিল।
সুবাদার শায়েস্তা খান মগ ও ফিরিঙ্গি জলদস্যুদের এহেন কার্যকলাপ জানতে পেরে অত্যন্ত মর্মাহত হন এবং এদের দমন করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। শায়েস্তা খান নিজেই অভিযানের পরিকল্পনা করেন এবং তার পুত্র বুযুর্গ উমেদ খান তা পরিচালনা করেন।
তিনি প্রায় ৩০০ রণতরী সজ্জিত করে জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযানে প্রস্তুত হন। প্রাথমিক ভাবে ১৬৬৫ সালে দিলওয়ার নামক মুঘল নৌবহরের এক পলাতক নৌ-অধ্যক্ষ এর নিকট হতে সন্দ্বীপ জয় করে স্বীয় শক্তি বৃদ্ধি করে নেন এবং রণকৌশলের অংশ হিসেবে ফিরিঙ্গিদের দলপতিকে মুঘল নৌবাহিনীতে চাকরি দিয়ে স্বীয় দলে ভিড়াতে সক্ষম হন। এটি যে নিঃসন্দেহে তার দূরদর্শিতারই পরিচয় বহন করে তা নিশ্চয়ই বলার অপেক্ষা রাখে না।

Source: eআরকি
অতঃপর শায়েস্তা খান হার্মাদ এ দুর্ধর্ষদের অত্যাচার এবং নির্যাতনের হাত থেকে জনগণকে রক্ষার উদ্দেশ্যে ১৬৬৫ সালের ২৪ শে ডিসেম্বরে চট্টগ্রাম অভিমুখে রওয়ানা হন। তার জ্যেষ্ঠপুত্র বুযুর্গ উমেদ খান এ অভিযানের প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত হন। পথিমধ্যে ইবনে হুসাইনের ২৮৮টি রণ তরী সাথে ফিরিঙ্গিদেরও ৪০টি রণতরী যোগ দেয়। একথা বলা ই বাহুল্য যে এতে তারা অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে পরিণত হয়।
১৬৬৬ সালের ১৪ই জানুয়ারি ফেনী নদী পার হয়ে মুঘলরা আরাকানি এলাকায় প্রবেশ করলে কাথালিয়া খালের নিকটবর্তী স্থানে ২৩শে জানুয়ারি প্রথম নৌযুদ্ধ সংঘটিত হয়। এতে মগবাহিনী পশ্চাদপসরণে বাধ্য হয়। কিন্তু মুঘল বাহিনী সম্মুখ দিকে অগ্রসর হতে থাকলে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। মুঘলদের কামানে হার্মাদ বাহিনীর অধিকাংশ রণতরী ডুবে যায় এবং বাকি ১৩৫টি রণতরী মুঘলদের হস্তগত হয়। ২৫শে জানুয়ারি চট্টগ্রাম দুর্গ অবরোধ করা হয় এবং এর পরের দিন অর্থাৎ ২৬ শে জানুয়ারি প্রধান সেনাপতি সুবাদার পুত্র বুযুর্গ উমেদ খান বিজয়গর্বে চট্টগ্রামে প্রবেশ করেন। এরই মধ্য দিয়ে হার্মাদ বাহিনীর ত্রাসের রাজত্বের অবসান ঘটে, অত্যাচার হতে মানুষ রক্ষা পায়। প্রায় ২০০০ জলদস্যু বন্দী হয়। চট্টগ্রাম মুঘল সাম্রাজ্যভুক্ত হয়। সম্রাট আওরঙ্গজেবের আদেশে এর নামকরণ করা হয় “‘ইসলামাবাদ”। এভাবেই এ মহান শাসক বাংলার উপকুলে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনগণের জানমাল রক্ষা করেন।
তাঁর দক্ষ সেনাপতিত্ব, ন্যায়বিচার এবং জনকল্যাণের অগ্রগতি সাধনের জন্য সমসাময়িক ও পরবর্তীকালের ঐতিহাসিকবৃন্দ শায়েস্তা খানের প্রশংসা করেছেন। তাঁর উদারতা, বদান্যতা এবং ধর্মপ্রাণতার উপরও তাঁরা গুরুত্ব প্রদান করেছেন। তিনি একজন কবি ও পণ্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর নির্মাণ কার্যাবলী পরবর্তীকালে শায়েস্তা খানী রীতি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। শস্যের কম মূল্যের জন্যও তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। শস্যের দাম এত কম ছিল যে, টাকায় আট মণ চাল বিক্রি হতো। ঢাকা ত্যাগ করার সময় তিনি নগরীর পশ্চিম তোরণে নিম্নলিখিত লিপিটি উৎকীর্ণ করিয়েছিলেন: ‘শস্যের এ ধরনের সস্তা বিক্রয়মূল্য প্রদর্শনকারীই একমাত্র এ তোরণ উন্মুক্ত করবে’। সমসাময়িক মানুষ তাঁকে শ্রেষ্ঠত্বের আদর্শরূপে বর্ণনা করেছেন।
তার এহেন জনকল্যাণার্থে গৃহীত পদক্ষেপ পর্যালোচনা করেই ইংরেজ ঐতিহাসিক ব্রাডলি বার্ট বলেন, “অন্য কোন সুবাদার বা শাসনকর্তা ঢাকায় শায়েস্তা খানের মত নিজেকে এত বেশি জ্বলন্ত রেখে যেতে পারেননি। বস্তুত, ঢাকা ছিল শায়েস্তা খানের নগরী”।
purchase dutasteride pills order flomax 0.4mg online cheap ondansetron 4mg pill
levofloxacin 250mg cheap order levaquin 250mg sale
buy levaquin generic buy generic levofloxacin
I like the valuable info you provide for your articles. I’ll bookmark your weblog and take a look at once more here regularly. I am reasonably certain I’ll be told lots of new stuff right here! Best of luck for the next!
I haven’t checked in here for a while because I thought it was getting boring, but the last few posts are good quality so I guess I will add you back to my everyday bloglist. You deserve it my friend 🙂
We’re a gaggle of volunteers and opening a brand new scheme in our community. Your web site offered us with valuable information to paintings on. You’ve performed an impressive task and our entire group will be grateful to you.
My programmer is trying to persuade me to move to .net from PHP. I have always disliked the idea because of the expenses. But he’s tryiong none the less. I’ve been using Movable-type on a variety of websites for about a year and am anxious about switching to another platform. I have heard great things about blogengine.net. Is there a way I can transfer all my wordpress content into it? Any kind of help would be greatly appreciated!