অবিশ্বাস্য ১০ ক্রিকেট রেকর্ড এর কাহিনী
শচিন টেন্ডুলকারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি কিংবা স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের ৯৯.৯৪ এভারেজের অতি মানবীয় ব্যাটিং গড় কিংবা মুত্তিয়া মুরলাধরিনের ১৩০০ এর অধিক আন্তর্জাতিক ম্যাচের উইকেট । এমনই কিছু ক্রিকেট রেকর্ড রয়েছে যা হয়তো ভবিষ্যতে আর অন্য কোনো ক্রিকেটারের পক্ষে ভাঙ্গা সম্ভব নাও হতে পারে। আজকের এই লেখাটিতে এমনি ১০টি ক্রিকেটের ওয়ার্ল্ডরেকর্ড নিয়ে লেখব যা আদৌ অন্য কোনো ক্রিকেটাররা ছুঁতে পারবেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে বেশ শক্ত সন্দেহ। রেকর্ড তৈরি হয় সে রেকর্ড ভাঙ্গার জন্যে এমন একটি কথা প্রচলিত আছে , কিন্তু এই অতিমানবীয় ক্রিকেটারদের গড়া কিছু ওয়ার্ল্ড রেকর্ড আছে যা হয়তো অন্য কোনো ক্রিকেটারের পক্ষে ভাঙ্গা প্রায় অসম্ভবই বলা যায় । চলুন জেনে আসি সেসব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড সম্পর্কে ।
শচিন টেন্ডুলকার এর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এ ৩৪,৩৫৭ রান
বর্তমানের ক্রিকেটে আন্তর্জাতিক ম্যাচের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীদের তালিকার ১ নাম্বার স্থানে রয়েছেন ভারতের ক্রিকেটের ঈশ্বরখ্যাত শচীন রমেশ টেন্ডুলকার। ২০১৩ সালের নভেম্বরে তিনি ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার আগে আন্তর্জাতিক ম্যাচে নিয়েছেন (টেস্ট ক্রিকেট,ওডিআই ও টি-টুয়েন্টি মিলিয়ে) ৩৪,৩৫৭ রান। এই রানগুলি করতে শচিন খেলেছেন টেস্ট,ওডিআই ও টি-টুয়েন্টি মিলিয়ে ২৪ বছরে ৬৬৪টি ম্যাচ ।
টেস্টে স্যার ডন ব্র্যাডম্যান এর ৯৯.৯৪ ব্যাটিং গড়
অনেকেই স্যার ডন ব্র্যাডম্যানকে সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে গণ্য করে থাকেন । তার ৫২ টেস্টের ক্যারিয়ারে তিনি ২৯টি সেঞ্চুরি ,১৩টি হাফ সেঞ্চুরি এবং ৭ বার কোনো রান না করেই আউট হন । স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের ব্যাটিং গড় ৯৯.৯৪ আর এ রেকর্ড আর কোনো ব্যাটসম্যানের পক্ষে ভাঙ্গা একপ্রকার অসম্ভবই ধরে নেওয়া যায় ।
টেস্টে সর্বোচ্চ গড়ধারী ব্যাটসম্যানদের (২০টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে) দ্বিতীয় নাম্বারে রয়েছেন আরেক অজি ব্যাটসম্যান অ্যাডাম ভোগস যার ব্যাটিং গড় ব্র্যাডম্যানের ব্যাটিং গডের ধারেকাছেও নেই। ভোগস ৬১.৮৭ ব্যাটিং গড় নিয়ে এই তালিকার ২য় স্থানে রয়েছেন । এছাড়া এখনো পর্যন্ত আর কোনো ক্রিকেটার পর্যন্ত ব্র্যাডম্যানের রেকর্ড ভাঙ্গার কাছাকাছি যেতে পারেননি ।
শচিন টেন্ডুলকারের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১০০টি সেঞ্চুরি
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি করা ভারতের লিটল মাস্টার খ্যাত শচীনের এই রেকর্ডটি ভাঙ্গা অনেক দুস্করই হবে বলা চলে । আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির তালিকার সেরা পাঁচে থাকা ক্রিকেটারদের মধ্যে ৩ জন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ফেলেছেন। এই তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক রিকি পন্টিং যার ক্যারিয়ারে রয়েছে ৭১টি সেঞ্চুরি , তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ৬৩ সেঞ্চুরি নিয়ে শ্রীলঙ্কান উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান কুমার সাংগাকারা এবং ৬২টি সেঞ্চুরি নিয়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছেন সাউথ আফ্রিকার বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার জ্যাক ক্যালিস।
বর্তমানে খেলা ক্রিকেটারদের শচিনের এই রেকর্ডটি হয়তো তারই স্বদেশি ক্রিকেটার বিরাট কোহলির ভাঙ্গার সম্ভাবনা আছে কারণ সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিকারীদের সেরা পাঁচের তালিকায় ৫৬ টি সেঞ্চুরি নিয়ে তিনিই একমাত্র ক্রিকেটার আছেন যিনি এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন । তবে শচীনের সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি করার রেকর্ডটি ভাঙ্গতে বিরাটের আরো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে আশা করি সেটা দুজনের সেঞ্চুরির সংখ্যার মধ্যে ব্যাবধান দেখে বুঝতেই পারছেন ।
মুত্তিয়া মুরালিধরন এর আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১৩৪৭টি উইকেট
মুত্তিয়া মুরালিধরন টেস্টে ৮০০ উইকেট, ওয়ানডে ক্রিকেটে ৫৩৪ উইকেট এবং টি-টুয়েন্টিতে নিয়েছেন ১৩টি উইকেট । আন্তর্জাতিক খেলায় সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রহকারী বোলারদের তালিকায় ২য় তে রয়েছেন শেন ওয়ার্ন যার উইকেট সংখ্যা ১০০১ । শেন ওয়ার্ন মুরালির আগেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহন করেন । টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডটি নিয়ে এই দুই ক্রিকেটারের মধ্যে চলেছিলো তুমুল হাড্ডাহাড্ডি লড়াই । প্রথমে টেস্টে কোর্টনি ওয়ালশের ৫১৯ রেকর্ড ভেঙ্গে দেন মুরালিধরন, পরে মুরলির এ রেকর্ড ভেঙ্গে দেন শেন ওয়ার্ন ।
মুরালি আবার শেন ওয়ার্নকে পেছনে ফেলে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকের তালিকায় ১ নাম্বার স্থানটি ধরে রাখেন ২ মাস পর্যন্ত । শেন ওয়ার্ন আবার তার রেকর্ডটি কেড়ে নেন এবং ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি ছিলেন টেস্টের সর্বোচ উইকেট সংগ্রাহক । টেস্টে সর্বপ্রথম ৬০০ ও ৭০০ উইকেটের মাইলফলকও প্রথম ছুঁয়েছেন শেন ওয়ার্ন । ওয়ার্নের অবসর গ্রহনের সময় মুরালির উইকেট সংখ্যা ছিলো ৬৭৪ । অবসরের আগে মুরালি টেস্টে গুনে গুনে বরাবর ৮০০টি উইকেট নিয়ে তার টেস্ট ক্যারিয়ারের ইতি টানেন ।
জিম লেকার এর এক ম্যাচে ১৯ উইকেট
১৯৫৪ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া এই টেস্ট ম্যাচটিতে ইংল্যান্ডের এই বোলার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৩৭ রানে ৯ উইকেট এবং ২য় ইনিংসে নিয়েছিলেন ৫৩ রানে নিয়েছিলেন ১০ উইকেট ।
আন্তর্জাতিক ম্যাচে এক ইনিংসে ১০ উইকেট লাভ করা আরেকজন ক্রিকেটার হচ্ছেন ভারতের অনিল কুম্বলে । তারপরেও লেকারের রেকর্ড অবশ্য কখনোই তেমন হুমকির মুখে পড়েনি । তার এ রেকর্ডটি গড়ার পরে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৬ উইকেটের বেশি পাননি আর কোনো বোলার । ক্রিকেট ইতিহাসে আর মাত্র ৩ জন আছেন যারা দুই ইনিংস মিলিয়ে এক টেস্টে ম্যাচে নেওয়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ উইকেট নিয়েছিলেন।
জ্যাক হবসের ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে ১৯৯টি সেঞ্চুরি
এ রেকর্ডটি কোনো ক্রিকেটার ভাঙ্গতে পারলে তার জন্যে নিশ্চয় ব্যাপারটি হবে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো । তবে এ রেকর্ডটির ভাঙ্গা যে পাহাড় নড়িয়ে দেওয়ার মতো অসম্ভব একটি ব্যাপার হবে সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই । জ্যাক হবস তার ফার্স্টক্লাস ক্যারিয়ারে ১৯৯টি সেঞ্চুরি এবং ৫০.৭০ গড়ে ৬১,৭৬০ রান অর্জন করেন ।
উইলফ্রেড রোডসের ফার্স্টক্লাস ক্রিকেটে ৪২০৮ উইকেট
তিনিই একমাত্র ক্রিকেটার যার এ কীর্তি রয়েছে । ইংল্যান্ডের গ্রেট এই লেগ স্পেনার হওয়ার পাশাপাশি একজন টপ ক্লাস ওপেনিং ব্যাটসম্যান ছিলেন ।
৪২০৮টি উইকেট ছাড়াও তিনি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচে প্রায় ৪০,০০০ মতো রান করেছেন এই লিজেন্ডারি অলরাউন্ডার। অবাক করে দেওয়ার মতো বিষয় হচ্ছে তিনি মাত্র ৫০০টি ম্যাচ খেলেছেন এই রেকর্ডগুলি করার পথে ।
উইলফ্রেড রোডসের ৩০ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ার
যদি বিশ্বযুদ্ধের কারণে তার ক্রিকেট খেলা থেমে না থাকতো তাহলে সংখ্যাটা আরো বেশিই হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো । উইলফ্রেড রোডস তার ৩০ বছর ক্রিকেট খেলার পরে তার অবিশ্বাস্য ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানেন ।
ফিল সিমন্সের ওয়ানডে ক্রিকেটে ০.০৩ বোলিং ইকোনোমি
ওয়ানডে ম্যাচে যদি একজন বোলার ১০ ওভার বোলিং করে থাকেন, তাহলে ভালো ইকোনোমি রেইটের মানদন্ড হিসেবে ধরে যায় ৪ এর নিচের ইকোনোমি রেইট কে (১০ ওভারে ৪০ রানের কম দিলে একজন বোলারের পক্ষে এই ইকোনোমি রেইট অর্জন করা সম্ভব)
১৯৯২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল সিমন্স ১০ ওভারে শুধুমাত্র ৩ রান দেন , সে ম্যাচে তার ইকোনোমি রেইট ছিলো ওভারপ্রতি ০.০৩
৩০ বলে ক্রিস গেইলের টি-টুয়েন্টি সেঞ্চুরি
টি-টুয়েন্টি শুরু হওয়ার প্রথমদিককার সময়ে, নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ড এন্ড্রু সাইমনডস ইংলিশ কাউন্টি টিম কেন্টের হয়ে টি-টুয়েন্টিতে সেঞ্চুরি করেন মাত্র ৩৪ বলে । যে রেকর্ডটি বলবৎ ছিলো ২০১৩ সাল পর্যন্ত , ২০১৩ তে ক্রিস গেইল রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর পক্ষ হয়ে ১৭৫ রানের অসাধারন একটি ইনিংস অপরাজিত থেকে শেষ করেন যে ইনিংসে তিনি সেঞ্চুরি করেন মাত্র ৩০ বলে আর টি-টুয়েন্টিতেই হয়তো ডাবল সেঞ্চুরিরটা আরেকটু হলে করেই ফেলছিলেন গেইল!
প্রথম সারির ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় গেইলের এই সেঞ্চুরিটি কম বলে করা সেঞ্চুরি তালিকায় প্রথমস্থানে আছে । টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের এ ইনিংসটি খেলার পথে ক্রিস গেইল নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ১৫৮ রানের রেকর্ড টি ভাঙ্গেন ।
order repaglinide 1mg for sale – buy generic repaglinide 1mg empagliflozin 10mg usa