কাশ্মীর: ভূ-স্বর্গ থেকে নরকে পরিণত হবার করুণ ইতিহাস

2

কাশ্মীর নামটি শুনলেই ভেসে উঠে লাশের মিছিল নিয়ে আর্তনাদ করা ভয়ানক এক নগরীর প্রতিটি সেকেন্ড কাটাতে হয় সীমা হীন অনিরাপত্তার চাদরে কিন্তু আবার এই কাশ্মীরকেই বলা হয় ভূ-স্বর্গ! কেন কাশ্মীরের এই করুন পরিণতি? কারা দায়ী? কেনই বা সৃষ্টি হয় সংঘাতের? ব্রিটিশ শাসিত ভারত উপমহাদেশের যে কয়টি স্থান নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল কাশ্মীর তাদের মধ্যে অন্যতমআজকের আয়োজনে থাকছে কাশ্মীরের  ইতিহাস, সংস্কৃতি রাজনীতিক সমস্যা সমাধান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা

অপরূপ কাশ্মির

ভৌগলিক  অবস্থা ও জলবায়ুঃ  

কাশ্মীরের অবস্থান মধ্য হিমালয়ে কাশ্মীরের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার বানিহাল থেকে বারামুলা আর প্রস্থে ৪২ কিলোমিটার বৃষ্টির পরিমাণ খুবই কম, তবে বৃষ্টির একদম দেখা মিলে না এই রকম নামার্চ-এপ্রিল মাসে পশ্চিমের ভূ-মধ্যসাগরে থেকে বয়ে আসা শীতল পুবালী বাতাসে বৃষ্টি হয়চারপাশের পর্বত সারির মধ্যে সমতল ভূমিতে মানুষের বসবাস।  কাশ্মীরের পশ্চিম দিকে পর্বতের বেষ্টনী উন্মুক্ত হয়ে চলে গেছে নদী আর সড়কওয়াল্টার আর. লরেঞ্জ’র বর্ণনায় কাশ্মীর হলো, “ কালো পর্বতমালার মধ্যে এক খন্ড জমিন সাদা পায়ের ছাপের মতো”।

কাশ্মীরের মানচিত্র
কাশ্মীরের মানচিত্র; Source: Pinterest

কাশ্মীরের অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে প্রতি বছরই পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজারো পর্যটক ছুটে আছেঅসংখ্য কবি সাহিত্যিক কাশ্মীরের রূপ বর্ণনা করতে গিয়ে নিজেকেই হারিয়ে খুঁজেছেকাশ্মীরের সৌন্দর্য লিখতে গিয়ে, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “ একটা সূর্য ডোবার যে রঙ তার সব সৌন্দর্য কি লেখায় আসে? লিখতে গিয়ে বড্ড দুর্বল লাগেদেখেছি, অনুভব করেছি, আনন্দিত হয়েছিসেটা আর পাঁচ জনকে বোঝাই কেমন করে?” স্বর্গের মত সাজানো ভূ খন্ডের প্রতিটি স্থানই যেন স্রষ্টা নিজ হস্তে বড় আপন করে সৃজন করেছেন

 কাশ্মীরে অপরূপ সৌন্দর্যের একটি দৃশ্য
কাশ্মীরে অপরূপ সৌন্দর্যের একটি দৃশ্য; Source: Twitter

সভ্যতার বিকাশ ধর্মীয় সম্প্রীতি :

হিন্দু মিথোলজি অনুসারেকাশ্বাপ’ নামে এক সাধু তীর্থযাত্রা কালে জানতে পারেন স্বতিস্বর নামে এক জলাশয়ের কথাস্বতিসর ভূতের দখলে ছিল বলে প্রচলিত ছিলসাধুর ইচ্ছায় দেবী সারিকা পক্ষীর আকারে সেখানে উপস্থিত হন এবং স্বর্গীয় পাথরের সাহায্যে ভূতদের বিতাড়িত করেনপরবর্তীতে পাথর থেকে সৃষ্টি হয় পর্বতমালার, যেটা বর্তমানে কাশ্মীর নামে পরিচিতসাধুর নামেই বর্তমান কাশ্মীরের নাম করন করা হয়েছে বলে ধারনা করা হয়

বৈজ্ঞানিক ধারণা মতে রাশিয়ান প্লেট ইন্ডিয়ান প্লেটের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে এই উপত্যকা সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারেপ্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে,  এখানে মানব বসতি স্থাপন হয়েছে ৩০০০ বছর আগেকাশ্মীরের আদি বাসিন্দাদের মূলত তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে- নাগ, পিশাচ ইয়াক্ষাএসব গোষ্ঠী লেক বা নালার পাশে বাস করততাদের বন্য পশু সাপের সাথে লড়াই করতে হত বলে তাদেরকে এসব নামে ডাকা হত বলে মনে করা হয়

কাশ্মীর
শীতের কাশ্মির

স্থানীয় ভাষায় কাশ্মীরকে বলা হয়কাশীরনামেযার অর্থ দাড়ায় যেখানেকশুর’ লোকেরা বাস করেমাংস ভক্ষন করত বলে তাদের কশুর বলে অভিহিত করা হতশীতল নিরিবিলি হওয়ায় কাশ্মীর যুগে যুগে সাধু কবি সাহিত্যিকদের তীর্থ স্থানে পরিণত হয়েছে

প্রথম এক শতক ব্রাহ্মণ বাদ বৌদ্ধ শাসনের আসা যাওয়ার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়েছেকাশ্মীরে বৌদ্ধ ধর্ম ক্রমান্বয়ে প্রবেশ করে বানারাসের এক দূতের মাধ্যমেতার নাম ছিল মাঝান্তিকাতিনি ধীরে ধীরে বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার প্রসার ঘটান সময় সম্রাট অশোক ছিল ক্ষমতায়তিনি মাঝান্তিকাকে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারে সহায়তা করেনএকই সময়ে শিবইজম প্রচারিত হতে থাকেকিন্তু সম্রাট অশোকের একান্ত ইচ্ছার ফলে বৌদ্ধ ধর্ম ব্যাপক হারে বিস্তৃতি লাভ করেতার মৃত্যুর পর বৌদ্ধ ধর্ম গুরুরা ব্রাহ্মণ আবাদূতের কাছে ধর্মীয় তর্কে হেরে যায়ফলে নতুন করে শুরু হয় শিব ধর্মের প্রচারনা সময় থেকে হিন্দু তথা ব্রাহ্মনবাদ বৌদ্ধ ধর্ম গোড়া গেথেঁ যায় কাশ্মীর ভূ-খন্ডেবর্তমান পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কাশ্মীরে ৬৮.% মুসলিম, ২৮.% হিন্দু, .% শিখ, .% বৌদ্ধ, এবং .% খ্রীষ্ট ধর্মের অনুসারী বসবাস করে

কাশ্মীরে ইসলাম ধর্মের আগমন কোন রাজার দখল বা শোষণের মাধ্যমে আসে নিবিভিন্ন সূফী পীরদের মাধ্যমে ধীরে ধীরে বিস্তৃতি লাভ করে ইসলামইতিহাস অনুযায়ী, ইসলাম সরাসরি আরব থেকে কাশ্মীরে এসেছে মধ্য এশিয়ার ভায়া হয়েফলে পরবর্তীতে কাশ্মীর বিভিন্ন মুসলিম শাসকদের অনুকূল ছিলউল্লেখযোগ্য যে, কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর সিংহভাগই গড়ে তুলেছিলেন মোগল শাসকরা

সবচেয়ে শীতল মসজিদটি কাশ্মিরে অবস্থিত; Source: Flickr

কাশ্মীর বিক্রির করুন ইতিহাস :

মোগল শাসকদের পরবর্তীতে আফগান শাসনের অধীনে ছিল কাশ্মীর, যদিও আফগান শাসন দীর্ঘস্থায়ী হয় নি১৮১৯ সালে কাশ্মীর দখল করে শিখরাশিখদের মূল দরবার ছিল লাহোরেশিখ সাম্রাজ্যের রাজা ছিলেন রঞ্জিত সিংএই সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল জম্মুর ডোগরা জমিদার গুলাব সিংকিন্তু ডোগরা জমিদারেরা ব্রিটিশদের তোষামোদ করতে ব্যস্ত ছিল সময় ভারতের বিস্তর অংশই ছিল ব্রিটিশদের দখলে১৮৩৯ সালে রঞ্জিত সিং মারা গেলে দুর্বল হয়ে পড়ে শিখ সাম্রাজ্য১৮৪৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর ব্রিটিশ জেনারেল লর্ড হার্ডিঞ্জ শিখদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেযুদ্ধে গুলাব সিং শিখদের কোন প্রকার সাহায্য করে নি, যদিও সে শিখ সাম্রাজ্যের অধীনে ছিলপ্রথম ব্রিটিশ শিখ যুদ্ধে ব্রিটিশরা বিজয়ী হয় এবং একই সাথে শিখ সাম্রাজ্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর অন্তর্গত হয়ব্রিটিশদের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের পুরস্কার হিসেবে ১৮৪৬ সালের ১৬ মার্চ, অমৃতসরে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়উক্ত চুক্তি অনুযায়ী ৭৫ লাখ রুপির বিনিময়ে গুলাব সিংকে কাশ্মীর সহ কয়েকটি পাহাড়ি জেলার মালিকানা দেয়   ব্রিটিশ সরকারচুক্তি অনুসারে খানকার মানুষগুলো মূলত হয়েছিল কেনা বেচাগুলাব সিং খুশি হয়ে প্রতিবছর একটা ঘোড়া, ১২ টা ছাগল এবং তিন জোড়া কাশ্মিরী শাল প্রদান করত ব্রিটিশ সরকারকে

ডোগরা সাম্রাজ্যের অধীনস্থ কাশ্মীরের মানচিত্র ও পতাকা
ডোগরা সাম্রাজ্যের অধীনস্থ কাশ্মীরের মানচিত্র ও পতাকা ; source: Youtube.com

কাশ্মীরের এই কেনা বেচাকে মহাত্মা গান্ধীডিড অব সেলহিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেনসাংবাদিক আর এস গুল লিখেছেন, “ ডাচদের কাছে নিউ ইয়র্ক সিটি বিক্রি হয়েছিল ১৬১৪ সালে মাত্র ২৪ ডলারে, রাশিয়ার কাছ থেকে মাত্র . মিলিয়ন ডলারে আলাস্কা কিনেছিল আমেরিকা১৭০ বছর পরও ৭৫ লাখ রুপির এই ক্রয় চুক্তি, এখনও কাশ্মীরি জাতি সত্তার সমস্যার মূল হিসেবে সামনে আসছে।” তার পরের এক শতাব্দী চলে ডোগরা জমিদার দের কুশাসনতারা প্রায় প্রতিটি পণ্য বস্তুর উপর কর আরোপ করেছিলডোগরা শাসকরা ব্যয়ের চেয়ে সঞ্চয়ের প্রতি বেশি মনোযোগী ছিল১৮৬৮ সালে উপত্যকায় রেভেনিউ আদায় হয়েছিল ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ৩১৮ রুপি!

বিভাজন সংকট দুর্ভাগ্য বরণ :

১৯৪৭ সালে, ব্রিটিশরা যখন বিদায় নেয় তখন তারা ৫৬২ টি প্রিন্সলি স্টেটকে হয় ভারত নয় পাকিস্তানে যোগ দিতে বলেভারতের স্টেট গুলো ভারতে এবং পাকিস্তানের গুলো পাকিস্তানে যোগ দেয়কিন্তু টি স্টেট স্বাধীন থাকতে চেয়েছিলহায়দ্রাবাদ, জুনগর এবং জম্মু কাশ্মীরএদের মধ্যে হায়দ্রাবাদ এবং জুনগর ছিল হিন্দু সংখ্যা গরিষ্ঠ কিন্তু তাদের রাজা ছিল মুসলিমজনগণ বিক্ষোভ করে ভারতে যোগদান করার জন্য, ফলে ভারতীয় সেনাবাহিনী এ্যাকশনে যায় এবং দখল করে নেয়পরবর্তীতে গন ভোটের মাধ্যমে বৈধতা হাসিল  করে নেয়

ভারতের সাথে চুক্তির মুহূর্তে নেহেরুর সাথে হরি সিং এবং শেখ আবদুল্লাহ
ভারতের সাথে চুক্তির মুহূর্তে নেহেরুর সাথে হরি সিং এবং শেখ আবদুল্লাহ; source: Pinterest

অপরদিকে,  জম্মু এবং কাশ্মীরের জনসংখ্যা ছিল মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ কিন্তু রাজা ছিল হরি সিংহরি সিং শুরুতে স্বাধীন থাকতে চেয়েছিলেন এবং একই সাথে নেহেরু জিন্নাহ সাথে দেন দরবারও করছিলেনহরি সিং কাশ্মীরকে এশিয়ার সুইজারল্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেনকাশ্মীরকে পাকিস্তানের অংশ করতে জিন্নাহ ছিল বেশ আত্মবিশ্বাসীতিনি কাশ্মীরকে তার পকেটে রাখাব্লাঙ্ক চেক’ বলে আখ্যায়িত করেনরাজা হরি সিং এর উপর নেহেরুর আস্থা ছিল কমনেহেরু, জেলে বন্দি শেখ আবদুল্লার মুক্তি চাচ্ছিলস্বাধীন হবার ১৩ দিন পূর্বে রাজা হরি সিং পাকিস্তানের সাথেস্ট্যান্ড স্টিলচুক্তি সাইন করেকিন্তু ভারত এই চুক্তিতে একমত হয়নি

দুটি নতুন দেশ জন্ম হবার ফলে বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলিম-শিখ-হিন্দু দের মধ্যে দাঙ্গার সৃষ্টি হয়কাশ্মীরেও একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে মুসলিম উপজাতিরা পাকিস্তানে পলায়ন করতে থাকেএই ঘটনায় পাকিস্তান ক্ষুব্ধ হয়ে পাহাড়ি নন স্টেট বাহিনীকে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রেরণ করেন, ২২ শে অক্টোবরকারণ চুক্তির কারণে সেনাবাহিনী সরাসরি আক্রমন করতে পারে নাইবাহিনীর আক্রমনে কাশ্মীরের অধিকাংশ অঞ্চল রাজার নিয়ন্ত্রণেরও বাইরে চলে যায়তারই প্রতিক্রিয়ায় মহারাজা হরি সিং ভারতের সাহায্য প্রার্থনা করেনশেখ আবদুল্লাহ (কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী নেতা) পরাশর্মক্রমে ভারতের সাথে চুক্তি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেকিন্তু ভারত সরকার তাদের সাথে যুক্ত হবার শর্ত জুড়ে দেয় এবং রাজা হরি সিং তা মেনে নেয়এরই ধারাবাহিকতায় স্বাক্ষরিত হয়  ‘ইন্সট্রুমেন্ট অব এসেশন’

বিভক্ত পাকিস্তানের মানচিত্র
বিভক্ত পাকিস্তানের মানচিত্র; Source: Hindustan Times

পাকিস্তান এই চুক্তিকে মেনে নেয় নি, তারা দাবি করে চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে হরি সিংকে বাধ্য করা হয়েছে চুক্তি করতেচুক্তির পর দিন ভারত তার নিয়মিত সৈন্য বাহিনী প্রেরণ করে এবং নন স্টেট বাহিনীকে হটিয়ে কাশ্মীরের দখল নেয়একই সময় পাকিস্তানও তাদের সেনাবাহিনী প্রেরণ করেফলে স্বাধীন হবার প্রথম বছরেরই যুদ্ধ বেঁধে যায় দুটি নতুন দেশের মধ্যেচুক্তি অনুসারে হরি সিং কাশ্মীরে পূর্ণ স্বায়ত্তত্বশাসন চেয়ে নেন এবং শেখ আবদুল্লাহকে অন্তর্বর্তী কালীন সরকারের প্রধান ঘোষণা করেনএই যুদ্ধের ফলে কাশ্মীর দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়এক অংশ চলে যায় ভারতের নিয়ন্ত্রণেযার নাম হয় জম্মু এবং কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের অংশের নাম হয় আজাদ কাশ্মীর

জাতিসংঘে কাশ্মীর :

১৯৪৮ সালে কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে বৈশ্বিক সমাধানের জন্য ভারত পাকিস্তান উভয় দেশ জাতি সংঘের সাহায্য প্রার্থনা করেসমস্যা সমাধানের জন্য জাতিসংঘ ভারত পাকিস্তান সংকট সমাধান বিষয়ক কমিশন গঠন করেসমাধান হিসেবে নিরাপত্তা পরিষদের রিজুলেশন ৪৭ প্রস্তাব করা হয় যেখানে ভারত এবং পাকিস্তানকে তাদের নিজ নিজ সৈন্য সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয় এবং সর্বশেষ গণ ভোটের আয়োজন করতে বলা হয়কিন্তু দিন শেষে ভারত এবং পাকিস্তান কোন পক্ষই তাদের সৈন্য হটিয়ে নেয় নিকার্যত জাতিসংঘের সমাধান ব্যর্থ হয়ে যায়১৯৪৮ সালে অস্ত্র বিরতি চুক্তির মাধ্যমে লড়াই বন্ধ হয় এবং ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি অনুযায়ী ভারত এবং পাকিস্তান কাশ্মীর সমস্যাকে নিজেদের মধ্যে সমাধান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং একই সাথেলাইন অব কন্ট্রোলঅবতারনা করা হয়।  পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে ভারত চীন যুদ্ধের ফলে চীন আকসাই চীন অঞ্চল দখল করে নেয়আবার, পাকিস্তানের বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে (The Trans Karakorum Tract) কাশ্মীরের বিশাল একটি অংশ, সাশগ্রাম ভ্যালি চীনকে উপহার দেয়ফলে মূল কাশ্মীর ভূখণ্ড তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়

কাশ্মিরের গ্রাম; Source: Care my trip

অপরদিকে ১৯৪৮ সালে ভারতীয় সরকার শেখ আবদুল্লাহকে প্রধানমন্ত্রী পদে ঘোষণা করে কাশ্মীরকে পূর্ণ সায়ত্ত্বশাসন দিয়ে দেয়কাশ্মীর সম্পর্কে ভারতীয় সংবিধানে একটি আর্টিকেল রয়েছে যা   আর্টিকেল ৩৭০ নামে বেশ পরিচিত।  এরই মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে কাশ্মীরের করুণ ইতিহাসকাশ্মীরের সাধারন   জনগণের উপর চলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নানাবিধ অত্যাচারকারণ কাশ্মীরের জনগণ পরাধীন থাকতে চায় না, তাদের দাবি একটাই নিজেদের প্রাপ্য অধিকার ফিরে পাওয়াএখনো কাশ্মীরের প্রতিটি অলি গলিতে স্লোগান  ওঠে, “ হক হামারা আজাদি, সিনকে লংঙ্গে আজাদি

 

কাশ্মীরের ভবিষ্যত:

ভূস্বর্গ কাশ্মির; Source: Reddit

ভারতীয় সরকার কাশ্মীরকে ওয়াদা অনুযায়ী সুযোগ সুবিধা প্রদান তো করেনি বরং বিভিন্ন সময় কাশ্মীরের সাধারন জনগণের উপর চালানো হয়  নারকীয় হত্যাযজ্ঞপ্রায় প্রতিদিনই লাশ নিয়ে মিছিল হয় কাশ্মীরের বিভিন্ন প্রান্তেকী হবে তবে ভবিষ্যৎ? এই মৃত্যুর অবধারিত ধারা কি তবে চলতেই থাকবে? বিখ্যাত আমেরিকার রাজনৈতিক বিশ্লেষক, নোয়াম চমস্কি বলেছেন, “ ৮০ সালের পর ভুয়া নির্বাচন কাশ্মীরকে বীভৎস করে দিয়েছে।  এই সংকট ভারত এবং পাকিস্তান উভয়ের জন্যই হাস্যকরতবে ভারত অপেক্ষাকৃত বড় রাষ্ট্র হবার কারণে কম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কিন্তু পাকিস্তানের ক্ষতি হচ্ছে বেশিতবে দিন শেষে পুজিঁবাদী  যুগে ভারত গণ ভোট আয়োজনের কোন দুঃসাহস করবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন’।“

সুতরাং, ভূ স্বর্গ কাশ্মীরের অধিকার কখন ফিরে পাবে তার কোন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে নাদিন শেষে হয়ত ছেলের লাশ বহন করা কফিন নিয়ে আর্তনাদ করা বাবার কান্না আর স্রষ্টার সাহায্য কামনা ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না

 

 

Source Feature Image
Leave A Reply
2 Comments
  1. Rumknq says

    order rybelsus 14mg online – semaglutide 14mg oral DDAVP brand

  2. Mjtdtt says

    cheap prandin 1mg – cheap repaglinide 2mg generic jardiance

sativa was turned on.mrleaked.net www.omgbeeg.com

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More