গ্রামে বিয়ের প্রস্তুতি এবং কিছু দরকারি টিপস

1

বছর ঘুরে চলে এসেছে ডিসেম্বর, প্রকৃতি ধিরে ধিরে জড়িয়ে নিচ্ছে শীতের চাদর।  নানা কারনে আমাদের দেশে বিয়েগুলো সাধারণত শীত কালেই হয়ে থাকে। বিয়ের অনুষ্ঠান মানেই আত্মীয়স্বজনদের সাথে দেখা করা, আনন্দ, ফুর্তি, খাওয়াদাওয়া আর এসবের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ “সাজগোজ”। ছেলেদের এই জাতীয় সমস্যায় তেমন পরতে হয় না। হলুদে পাঞ্জাবি, বিয়েতে স্যুট, বৌ-ভাতে ফর্মাল বা সাধারন কিছু। মেয়েদের জন্য আজকাল পার্লার এক বিরাট সমাধান। কিন্তু বিয়ে যদি হয় গ্রামে! সবকিছু নেয়া হলেও কিছু যেন থেকেই যায়। এই ছোট খাটো সমস্যা গুলো কিভাবে এড়ানো যায় তা নিয়েই ইতিবৃত্তের এবারেএ আয়োজন।

প্রথমেই বড় ঝামেলা কি পড়বো তা ঠিক করা। বিয়েতে আজকাল দেখা যায় সবাই একই রঙের বা এক রঙের বিভিন্ন শেডের পোষাক মিলিয়ে পড়ছে। কি রঙের বা ধাচের পোষাক পড়া হবে তা ফোনে আগেই জেনে নেয়া ভালো। কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলে বেছে নিন হরেক রঙের কোন পোষাক। রঙ এবং ধাচের সমস্যা চুকে গেলে নজর দিতে হবে পরিবেশের উপর। আমরা সারাবছর যে পরিবেশে থাকি বিয়ের পরিবেশ একটু ভিন্ন হবেই। পোষাক নির্বাচনের সময় এসব দিক মাথায় রাখলে বিভিন্ন বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

বিয়ে মানেই শাড়ি, গায়ে হলুদ থেকে বিয়ে কিংবা বৌভাত সব অনুষ্ঠানে শাড়িতেই অনন্যা বাংলার ললনা। আজকাল শাড়ি পড়ায় পটু হয়াটা সত্যি বিশাল দক্ষতা। অনেকে বিয়ে বাড়িতে গিয়ে শেষ রক্ষা খুঁজেন চাচি-ফুপিদের  কাছে। সাত-পাচ মিলিয়ে কোন রকমে শাড়ি পড়লেই হলো! এই সমস্যা এড়াতে নিতে পারেন কিছু পূর্ব প্রস্তুতি।  যে শাড়িটি পড়বেন বলে ঠিক করেছেন তা নিয়ে চলে যান পাশের কোন পার্লারে। নিজের মনের মতন করে শাড়িটি পড়ে নিন। এবার বাসায় ফিরে কুচিতে, আঁচলে এবং ভাজে ভাজে পিন দিয়ে আটকে নিন। এবার পিন সহ শাড়িটি খুলে সুবিধা মতন   ভাজ করে নিন। যখন আপনি আবার শাড়িটি পড়ার জন্য বের করবেন তখন জটিল জায়গা গুলোতে আগে থেকে পিন দিয়ে আটকানো থাকায় কোন সমস্যায় পরতে হবে না। শুধু ভাজ মতন শাড়িটি গুজে নিলেই দেখবেন চমৎকার শাড়ি পড়া হয়ে গেছে।

বিয়েতে ভিন্ন ভিন্ন অনুষ্ঠানে ভিন্ন পোষাকের সাথে চাই ভিন্ন গয়না। কিন্তু সময় মত সব খুজে পাওয়া ভারি মুশকিল। চুড়ি, নেকলেস, দুল, টিকলি, আংটি সব একসাথে পেচিয়ে যায়। তা ছাড়া হারিয়ে যাওয়ার ভয় তো আছেই। তাই প্রতিটা অনুষ্ঠানের জন্য গয়নার আলাদা আলাদা বক্স নিন। যেদিন যে গয়না গুলো পড়বেন সেদিন শুধু সেই বক্সটিই বের করবেন। দেখবেন ভেজাল অনেক কমে গেছে। আবার সব গয়না খুলে আগের বক্সে রেখে দিন, এতে করে গয়না হারিয়ে যাবার সম্ভাবনা কম থাকে। চাইলে প্রতিটা অনুষ্ঠানের কাপড়ের ভাজেই রেখে দিতেপারেন উপযুক্ত গয়নার বক্সটি। এতে করে সব কিছু বের করতেও সুবিধা হবে।

এবারে চিন্তা মেকআপ, মেকআপের  ঝামেলা এড়াতে আগে ভাবুন আপনি কিরকম লুক চাচ্ছেন। প্রতিটা অনুষ্ঠানে বেজ মেকআপ একই রেখে বৈচিত্র আনুন চোখের কাজে। এতে আপনার লুক হবে ভিন্ন কিন্তু খুব অল্প প্রসাধনী দিয়ে। আইশেডোর মাল্টি কালার প্লেট থাকলে ভালো হয়, এতে একটি প্লেটেই আপনি ভিন্ন ছোয়া আনতে পারবেন প্রতি বার। সম্ভব হলে মেকআপ স্পঞ্জ অতিরিক্ত নেয়া ভালো, কারন বিয়ে বাড়িতে পরিস্কার করার সুযোগ নাও পেতে পারেন। আই পেন্সিলের জন্য সার্প্নার, বা যারা আই লাইনার দিতে টেপ ব্যাবহার করেন তারা প্রয়োজনীয় টেপ বা যার যেটা স্পেশাল লাগে তা নিয়েছেন কি না বার বার চেক করুন যাতে কিছু না রয়ে যায়।

চুল আজকাল অনেকেই খুব সুন্দর করে নিজেই গুছিয়ে নিতে পারেন। চুল নিয়ে কি করবেন বুঝতে না পারলে বিয়েতে যাওয়ার আগে কোন পার্লার থেকে মন মতন কাট দিয়ে নিন, যেন খোলা চুলেই আপনাকে সুন্দর মানিয়ে যায়। তা ছাড়া আর্টিফিশিয়াল ফুল বা বিভিন্ন চুলের গহনা তো আছেই। চুল যারা কম্ব করে ফুলিয়ে নিতে চান তাদের জন্য বলবো না করাই ভালো। কারণ রাতে বা অনুষ্ঠানের পর চুলের জট ছাড়ানো অনেক ঝামেলা। আজকাল বাজারে চুল ফোলানোর ফোম কিংবা বিভিন্ন বান পাওয়া যায়। চুলের ভের ফোম দিয়ে ভালো ভাবে ক্লিপ দিয়ে দিলেই সহজে পেয়ে যাবেন কাঙ্ক্ষিত চুলের সাজ।

বিয়ে বাড়িতে কাপড় রাখা আবার বের করা এক বড় সমস্যা। আগে যা পড়েছেন অগুলো উপরে থাকে এলোমেলো ভাবে আর তার মাঝে আপনার কাঙ্ক্ষিত  জিনিষটাই খুঁজে পাওয়া কঠিন। এই সমস্যা এড়াতে একটা অতিরিক্ত খালি ব্যাগ নিয়ে নিন। প্রতিটা অনুষ্ঠানের পর খালি ব্যাগে ব্যাবহার করা জিনিষ গুলো রাখুন, আসার সময় সব লাগেজে ভরে ব্যাগটিও লাগেজে ভরে নিন। এতে আপনার শ্রম এবং সময় অনেকটা বেচে যাবে।

ক্লিপ-সেফটিপিনের মতন প্রয়োজনীয় জিনিষ গুলি প্রয়োজনের থেকে বেশি নিয়াই ভালো। যারা চশমা ব্যাবহার করেন তারা অবশ্যই অতিরিক্ত চশমা নিতে ভুলবেন ননা। শীতের সময় তাই প্রয়োজন মতন শীতের পোষাক নিন। এতো কিছুর পরেও কিছু না কিছু বিড়ম্বনা শেষ মুহূর্তে পোহাতেই হয়। তাও যতটা সম্ভব সমস্যা এড়ানোর চেষ্টা করা। ছোট ছোট কিছু দিক খেয়াল রাখলেই নতুন পরিবেশেও সহজে নিজেকে মানিয়ে নেয়া যায়। মনে রাখবেন সচেতনতা অনেক বড় একটি সমাধান।

Leave A Reply
1 Comment
  1. Acfbyi says

    purchase terbinafine online – order fluconazole sale griseofulvin without prescription

sativa was turned on.mrleaked.net www.omgbeeg.com

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More