ব্রাজিলের ১৯৯৪ বিশ্বকাপ জয়: সমালোচনা এবং সফলতার অনন্য এক গল্প

42

ফুটবলের সাদা ক্যানভাসে সবচেয়ে বেশী রঙ ছড়িয়েছে যে দলটি, সে দলটিই কিনা টানা ২৪ বছর শিরোপা বঞ্চিত ছিল। একের পর এক লিজেন্ড দের জন্ম দিয়েও তারা শিরোপা ঘরে তুলতে ব্যর্থ হয়েছিলো। হয়তো ভাগ্য দেবতা সাথে ছিলেন না। নয়তো ইতিহাসের সেরা দল নিয়েও ১৯৮২ তে কেন ব্যর্থ হবে তারা। জিকো সক্রেটিস রা তাদের সুন্দর জাদুকরী ফুটবল দিয়ে সফলতা আনতে না পারলেও, এক যুগ পরে রোমারিও বেবেতো রা ব্রাজিলকে এনে দেয় সেই কাঙ্ক্ষিত বিশ্বকাপ শিরোপা। ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী জোগো বনিতো উপহার দিতে না পারলেও, শিরোপা এনে দেশের মানুষের শিরোপা ক্ষুধা পুরণ করেছিলো ১৯৯৪ এর ব্রাজিল ফুটবল  দল।

বিশ্বকাপ শিরোপা নিয়ে সেলিব্রেশনে ব্যস্ত ব্রাজিল ফুটবল দল
বিশ্বকাপ শিরোপা নিয়ে সেলিব্রেশনে ব্যস্ত ব্রাজিল ফুটবল দল Source: pinterest

অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, বিশ্বকাপ শিরোপা জিতার পরেও ১৯৯৪ এর ব্রাজিল ফুটবল দল সমালোচিত হয়েছিলো তাদের নিজের দেশের মানুষের কাছেই। তৎকালীন কোচ পেরেইরা বেড়িয়ে এসেছিলেন ব্রাজিলের দৃষ্টিনন্দন সুন্দর ফুটবলের ধারণা থেকে। যেকোনো মূল্যেই তিনি জিততে চেয়েছিলেন শিরোপা। তাই ব্রাজিলের চিরাচরিত আক্রমণাত্মক ফুটবলের বদলে, তিনি দলকে তৈরি করেছিলেন তার আদলে। তার নীতি ছিল, ‘ডিফেন্স উজ দ্যা বেস্ট অফেন্স”। অতিরিক্ত রক্ষণমনা হয়ে যাওয়ায়, দর্শক রা তাদের কাঙ্ক্ষিত শৈল্পিক ছোঁয়া পাচ্ছিলেন না খেলায়। ফলস্বরূপ, অনেক তিরস্কারের সম্মুখীন হতে হয় তাকে। প্রথম দিকে ফল পেতে কষ্ট হলেও, এই “বোরিং” আখ্যায়িত দলটিই ব্রাজিলকে এনে দেয় বহুল আখাংকিত চতুর্থ বিশ্বকাপ শিরোপা। যা ব্রাজিল ফুটবলের ইতিহাস কে করেছে আরও সমৃদ্ধ।

১৯৯৪ এর বিশ্বকাপ আসরটি প্রথম থেকেই উত্তাপ ছড়াচ্ছিল বিভিন্ন কারণে। ফিফার তৎকালীন কমিটি সমালোচিত হয়েছিলো ইউনাইটেড স্টেটস কে টুর্নামেন্ট টি হোস্ট করার অনুমতি দেয়ায়। তখনো ফুটবলের বীজ বপন করা হয়নি যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। দেশটি নতুন নতুন ফুটবল নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। অনেকের মতে আমেরিকায় ফুটবলের প্রসার ঘটাতেই ফিফা এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো, যা জন্ম দিয়েছিলো অনেক সমালোচনার। সবার মনেই একটা সংশয় ছিল, যে দেশ ফুটবল কে ভালো মতো চিনে উঠতে পারে নি এখনো, তারা কি পারবে ঠিকমতো টুর্নামেন্ট টি পরিচালনা করতে? তবে সবাইকে ভুল প্রমাণ করে সেই বিশ্বকাপ আসরে দর্শকের উপস্থিতি রেকর্ড হয়েছিলো সর্বাধিক, আগের সকল আসর থেকে দর্শক বেশী ছিল প্রতি ম্যাচে। এছাড়াও আরও বেশ কিছু কারণে সেই আসর টি স্মরণীয় হয়ে থাকবে ফুটবল ইতিহাসে। ১৯৯৪ বিশ্বকাপেই শেষ বারের মতো ২৪ টি দল অংশগ্রহণ করে এবং সেবারই সর্বপ্রথম পেনাল্টি শুট আউটের নিয়ম প্রচলন করা হয়। প্রতি ম্যাচ জয়ের জন্য আগে ২ পয়েন্ট প্রদান করা হলেও, এই আসর থেকেই প্রতি জয়ে ৩ পয়েন্ট প্রদানের নিয়ম করা হয়।

১৯৯৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিল ফুটবল দল:

প্রথমেই দলটির বিশ্বকাপ স্কোয়াড দেখে নেয়া যাক

গোলকিপার:

টাফারেল

জেত্তি

গিল্মার রিনাল্ডি

ডিফেন্ডার:

জর্জিনহো

রিকার্ডো রোচা

রোনাল্ডাও

ব্রাংকো

আ্যল্ডাইর

কাফু

মার্কিও সান্তোস

মিডফিল্ডার:

দুংগা

জিনহো

রাই

লিওনার্দো

মাজিনহো

ফরওয়ার্ড:

বেবেতো

রোমারিও

পাওলো সার্জিও

মুলার

রোনালদো

ভিওলা

কোচ: পেরেইরা কার্লোস আলবার্তো

১৯৯৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিল স্কোয়াড
১৯৯৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিল স্কোয়াড Source:
four four two

ফরমেশনঃ

পেরেইরা দলকে ৪-২-২-২ ফর্মেশনে খেলাতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। সবসময় রক্ষণের প্রতিই তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন বেশী। মূল একাদশে গোলবার সামলাতেন দলের প্রথম পছন্দ টাফারেল। তার সামনে থাকতেন সেন্টার ব্যাক জুটি আ্যল্ডাইর এবং মার্কিও সান্তোস। লেফট ব্যাক পজিশনে বরাবরের মতোই ব্র্যাংকো এবং রাইট ব্যাক জর্জিনহোকেই প্রাধান্য দিতেন তিনি। রক্ষণ কে বেশী গুরুত্ব দেয়ার কারণে হোল্ডিং মিডে দুইজন সলিড হোল্ডিং মিডফিল্ডার দুংগা এবং মাউরো সিলভা থাকতেন। তাদের ঠিক উপরেই থাকতেন জিনহো এবং রাই অথবা মারজিনহো। যারা এটাকিং মিড থেকে রাইট, সেন্ট্রাল, লেফট মিড কাভার করে উইং থেকেও কাট ইন করে ঢুকে পড়তে পারতেন। এবং তাদের উপরে ছিলেন দলের তুরুপের টেক্কা রোমারিও এবং বেবেতো। ডেডলিয়েস্ট এই জুটি একের পর এক ম্যাচ বের করে এনে দলকে জিতিয়ে ছিলেন শিরোপা। দুইজন সলিড হোল্ডিং মিড, সাথে চীনের প্রাচীরের মতো ডিফেন্স ভেদ করে গোল দেয়া প্রতিপক্ষের জন্য প্রায় অসম্ভবই ছিল। পুরো টুর্নামেন্টে গোল হজম করেছিলো মাত্র ৩ টি। যা থেকে বুঝা যায়, শিরোপা জিততে রক্ষণের ভূমিকা কতোটুকু ছিল।

ব্রাজিল দলের ফরমেশন
ব্রাজিল দলের ফরমেশন Source: sharemytactics.com

গ্রুপ পর্ব:

গ্রুপ পর্বে ব্রাজিলের সাথে ছিলো রাশিয়া, ক্যামেরুন এবং সুইডেন। তুলনামূলক সহজ গ্রুপে থাকায় দ্বিতীয় রাউন্ড প্রায় নিশ্চিতই ছিল। গ্রুপ পর্ব পার হতে তাই খুব একটা কষ্ট হয়নি তাদের।

প্রথম ম্যাচ রাশিয়ার বিরুদ্ধে। ২৬ মিনিটেই রোমারিও’র গোলে লিড নেয় সেলেকাও রা। রাশিয়ার দুর্বল আক্রমণভাগ ভয় দেখানোর মতোও তেমন কোন আক্রমণ করতে পারে নি। ৫২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে করা রাই এর গোলে ২-০ ব্যবধানে প্রথম ম্যাচ জিতে সুন্দর সূচনা করে টুর্নামেন্টের।

রাশিয়ার সাথে ম্যাচে ট্যাকেলের শিকার রোমারিও
রাশিয়ার সাথে ম্যাচে ট্যাকেলের শিকার রোমারিও

পরবর্তী ম্যাচ ছিল ক্যামেরুনের সাথে। এই ম্যাচও হেসে খেলেই জিতে যায় তারা। ৩-০ গোলে জয়ের এই ম্যাচে ব্রাজিলের হয়ে গোল করেন যথাক্রমে রোমারিও, মার্কিও সান্তোষ এবং বেবেতো।

ক্যামেরুনের সাথে ম্যাচের একটি মুহূর্ত
ক্যামেরুনের সাথে ম্যাচের একটি মুহূর্ত
Source: fifa.com

ব্রাজিলের জন্য আসল পরীক্ষা অপেক্ষা করছিলো তাদের পরবর্তী ম্যাচে। প্রতিপক্ষ ছিল শক্তিশালী সুইডেন। প্রথম কোন বড় দলের সাথে খেলা, তাই উত্তেজনাটাও ছিল আগের চেয়ে বেশী। আগের দুই ম্যাচ ক্লিন শিট রাখা ব্রাজিলের রক্ষণভাগের জন্য এটা ছিল প্রথম কঠিন পরীক্ষা। একের পর এক আক্রমণ করেই যাচ্ছিলো সুইডেন। ফল পেতেও দেরী হয়নি তাদের। ম্যাচের ২৩ মিনিটেই এন্ডারসনের গোলে ১-০ গোলের লিড নেয় সুইডেন। প্রথমার্ধে অনেক চেষ্টা করেও গোল শোধ দিতে ব্যর্থ হয় ব্রাজিল। দ্বিতীয়ার্ধেই শুরুতেই গোল শোধ দেয় ব্রাজিল। স্কোরার সেই রোমারিও। টুর্নামেন্টের তৃতীয় গোল ছিল এটি। গোল শোধের পর ব্রাজিল আরো রক্ষণাত্মক হয়ে যায়। গোল না খাওয়াই যেন ছিল মূল লক্ষ্য। ফলস্বরূপ ১-১ ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়ে দুই দল।

সর্বমোট ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ড নিশ্চিত করে তারা।

সুইডেনের সাথে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মাউর সিলভা
সুইডেনের সাথে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মাউর সিলভা Source: fifa.com

নক আউট স্টেজ:

রাউন্ড অফ সিক্সটিনে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ নির্ধারিত হয় স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র। নাটকীয় সেই ম্যাচে প্রথম থেকেই খুব ভালো ভাবে লড়াই করে যাচ্ছিলো স্বাগতিক দল। ম্যাচের ৪৩ মিনিটের সময় লাল কার্ড খেয়ে মাঠ ছাড়েন ব্রাজিলের লেফট ব্যাক লিওনার্দো। দশ জনের দল নিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় ব্রাজিল। মনে হচ্ছিলো ব্রাজিলের বিশ্বকাপ যাত্রার হয়তো ইতি পড়বে এখানেই। কিন্তু হাল ছাড়েন নি কোচ পেরেইরা। রক্ষণ সামলানোর জন্য মিডফিল্ডার জিনহোর পরিবর্তে মাঠে নামান তরুণ কাফু কে। লক্ষ্য ছিল গোলবার অক্ষত রাখা। ব্রাজিলের ইস্পাত কঠিন ডিফেন্স ভাঙ্গা প্রায় অসম্ভব মনে হচ্ছিলো যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। যুক্তরাষ্ট্র যখন আক্রমণ আরও বাড়াতে থাকলো, তখনই কাউন্টার এটাক থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন বেবেতো। ৭৩ মিনিটে করা তার একমাত্র গোলেই ১-০ গোলের জয় পায় ব্রাজিল। শেষ পর্যন্ত অনেক চেষ্টা করেও যুক্তরাষ্ট্র আর ম্যাচে ফিরতে পারে নি। স্বাগতিক দের বিশ্বকাপ যাত্রার ইতি ঘটে এখানেই এবং ব্রাজিল চলে যায় কোয়ার্টার ফাইনালে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে খেলায় লিওনার্দো কে লাল কার্ড দেখাচ্ছেন রেফারি
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে খেলায় লিওনার্দো কে লাল কার্ড দেখাচ্ছেন রেফারি Source: alamy.com

কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ ছিল নেদারল্যান্ডস। ডেনিশ বার ক্যাম্প, রোনাল্ড কোম্যান, ফ্র্যাংক রাইকার্ড দের নিয়ে গড়া শক্তিশালী নেদারল্যান্ড কে হারানোর জন্য ব্রাজিলকে একটু বেশী কিছুই করতে হতো। ১৯৭৪ এর পর এই প্রথম দুই দল মুখোমুখি হয়েছিলো বিশ্বকাপের আসরে। ৭৪ এর সেই হারের বদলা নেয়ার জন্য মুখিয়ে ছিল সেলেকাও রা। কিন্তু ম্যাচ শুরু হওয়ার পর নেদারল্যান্ডসই আক্রমণ বেশী করছিলো। মাঝে মাঝে কয়েকবার পাল্টা কাউন্টার এটাকে উঠলেও কোন দলই সুবিধা করতে পারেনি। গোলশূন্য ফার্স্ট হাফের পর দর্শকরা ভাবতেই পারে নি দ্বিতীয়ার্ধে তাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে। ম্যাচের ৫৩ মিনিটেই বেবেতোর পাস থেকে গোল করে দলকে লিড এনে দেন রোমারিও। গোল শোধ দেয়ার জন্য মরিয়া নেদারল্যান্ড একের পর এক আক্রমণ করেই যায়। ১০ মিনিট পর এক আক্রমণ থেকে কাউন্টার এটাকে আরেকটি আরেকটি গোল খেয়ে বসে নেদারল্যান্ড। সবাই ধরে নিয়েছিলো ম্যাচ হয়তো এখানেই শেষ। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা এতো সহজেই এই ট্র্যাজেডি শেষ করতে চান নি। মাত্র ১ মিনিট পরেই ড্যানিশ বারক্যাম্পের একক নৈপুণ্যের কাছে হার মানতে হয় ব্রাজিলের ইস্পাত কঠিন ডিফেন্স কে। গোল করে ম্যাচে ফিরান দল কে। মিনিট ১২ পরেই কর্নার পায় নেদারল্যান্ড। সেই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে জালে বল জড়ান নেদারল্যান্ডের মিডফিল্ডার এরন উইন্টার। নাটকীয় ভাবে ঘুরে যায় ম্যাচ। ২-০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ২-২। গল্পের শেষ টা আরেকটু মজার। লাস্ট ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে লাল

কার্ড খাওয়ায় নিষিদ্ধ ছিলেন লিওনার্দো। তার বদলি হিসেবে দলে জায়গা পেয়েছিলেন ব্র্যাংকো। ৮১ মিনিটে ২৫ গজ দূরে একটি ফ্রি কিক পায় ব্রাজিল। সেই ফ্রিকিক থেকে দুর্দান্ত এক গোল করে দলকে ম্যাচ জিতান এই ব্র্যাংকোই। এর চেয়ে নাটকীয় আর কিই বা হতে পারে। বীরের মতো লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত ব্রাজিলের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হয় নেদারল্যান্ড কে।

কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফ্রিকিক থেকে জয়সূচক গোল করার পর দৌড়ে ছুটছেন ব্র্যাংকো
কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফ্রিকিক থেকে জয়সূচক গোল করার পর দৌড়ে ছুটছেন ব্র্যাংকো Source:
empics sport

সেমিফাইনালে ব্রাজিলের সাথে আবারো দেখা হয় সুইডেনের। ফাইনালে যেতে চাইলে জয়ের কোন বিকল্প নেই। খেলা শুরু হওয়ার পর থেকে দুই দলের গোলকিপারের নৈপুণ্যে ম্যাচ গোল শূন্য থাকে। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে সুইডিশ ক্যাপ্টেন জোনাস থার্ন লাল কার্ড দেখেন। তারপরেও ব্রাজিল একের পর এক আক্রমণ করেও সুবিধা করতে পারছিলো না। ম্যাচের ৮০ মিনিটের সময় মাঠের ডান প্রান্ত থেকে জর্জিনহোর ইঞ্চ পারফেক্ট ক্রস খুঁজে নেয় রোমারিও’র মাথা। রোমারিও বল জালে পাঠাতে ভুল করেন নি। তার সেই গোলেই সুইডিশদের ফাইনাল স্বপ্ন ভঙ্গ হয়। ১-০ গোলের জয়ে ফাইনালে চলে যায় ব্রাজিল।

সেমিফাইনালে সুইডেনের সাথে ম্যাচের একটি মুহূর্ত
সেমিফাইনালে সুইডেনের সাথে ম্যাচের একটি মুহূর্ত Source: four four two

ফাইনালে মুখোমুখি হয় ব্রাজিল এবং ইতালি। ফাইনালটি দুইদলের জন্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কেননা দুইদলের ৩ টি করে শিরোপা ছিল। যে জিতবে সেই ৪ শিরোপা নিয়ে হবে টুর্নামেন্টের সফলতম দল। খেলা শুরু হওয়ার পর থেকে যেন গোল মিসের মহড়া শুরু হয়। দুই দলই একের পর এক সুযোগ হাতছাড়া করতে থাকে। রোমারিও দুইবার দলকে লিড এনে দেয়ার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেন নি। কাউন্টার এটাকে পাওয়া দারুণ একটি সুযোগও হাতছাড়া করেন ইতালির ড্যানিয়েল মাস্যারো। দুইদলই এভাবে একের পর এক সুযোগ হাতছাড়া করে। ফলস্বরূপ গোলশূন্য ম্যাচ শেষ হয়। অতিরিক্ত সময়ের খেলার পরও ফলাফল গোলশূন্য থাকায় ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোন ফাইনাল পেনাল্টি শুট আউটে যায়। পেনাল্টি শুট আউটে ইতালি কে ৩-২ এ হারিয়ে নিজেদের চতুর্থ শিরোপা জিতে নেয় ব্রাজিল। প্রথম বার পেনাল্টি শুট আউটের নিয়ম প্রচলিত হওয়ার পর তার প্রথম ভুক্তভোগী হল ইতালি। ড্যানিয়েল মাস্যারো, ফ্র্যাংকো বারেসি, রবার্তো বাগগিও রা হয়তো এখনো নিজেদের দোষেন সেই স্পট কিক মিসের জন্য। ইতিহাস বড়ই নিষ্ঠুর। পরাজিত দের কেউই মনে রাখে না। সেজন্যই দুংগা, রোমারিও, বেবেতো দের নাম যেভাবে উচ্চারিত হয় সেভাবে বারেসি বা বাগগিও দের নাম টা উচ্চারিত হয় না।

পেনাল্টি শুট আউটে পরাজয়ের পর হতাশায় ভেঙ্গে পড়েছেন বাগগিও, পেছনে সেলিব্রেশনে ব্যস্ত ব্রাজিল দল
পেনাল্টি শুট আউটে পরাজয়ের পর হতাশায় ভেঙ্গে পড়েছেন বাগগিও, পেছনে সেলিব্রেশনে ব্যস্ত ব্রাজিল দল
Source: bleacher

ফুটবল খেলাকে শৈল্পিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার মূল কারিগর বলা হয় ব্রাজিলকে। সেই ব্রাজিলকেই ১৯৯৪ সালে দুয়ো শুনতে “বোরিং” ফুটবলের জন্য। তবে বোরিং হোক কিংবা শৈল্পিক, ইতিহাসের পাতায় বেচে থাকতে হলে বিজিত হওয়ার কোন বিকল্প নেই। তাই তৎকালীন ব্রাজিল কোচ যেকোনো মূল্যেই চেয়েছিলেন সেই সফলতা। প্রথমে দুয়ো শুনলেও, পরবর্তীতে ঠিকই সমাদৃত হন। ২৪ বছরের খরা ঘুচিয়ে দেশকে এনে দিয়েছেন কাঙ্ক্ষিত শিরোপা, যেই শিরোপার কারণেই ব্রাজিল আজ এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দল। তাই আপনি চাইলে বোরিং বলতে পারেন, কিন্তু ইতিহাস এই ব্রাজিল দলকে আখ্যায়িত করবে সফল দল হিসেবেই।

Source Featured Image
Leave A Reply
42 Comments
  1. MarcelZor says

    https://canadaph24.pro/# canadian pharmacy ratings

  2. StevenJeary says

    canadian pharmacies online: Prescription Drugs from Canada – canadianpharmacy com

  3. RickyGrila says

    pharmacies in mexico that ship to usa mexican pharmacy pharmacies in mexico that ship to usa

  4. MarcelZor says

    http://canadaph24.pro/# online canadian pharmacy

  5. RickyGrila says

    best online pharmacy india Cheapest online pharmacy india pharmacy

  6. MarcelZor says

    http://mexicoph24.life/# mexican pharmaceuticals online

  7. RickyGrila says

    buying from online mexican pharmacy mexican pharmacy buying prescription drugs in mexico online

  8. StevenJeary says

    best canadian pharmacy to buy from: canadian pharmacy prices – online canadian pharmacy

  9. MarcelZor says

    http://canadaph24.pro/# canada drug pharmacy

  10. RickyGrila says

    mexican border pharmacies shipping to usa mexico pharmacy mexican pharmacy

  11. MarcelZor says

    https://mexicoph24.life/# mexico pharmacies prescription drugs

  12. RickyGrila says

    mexican pharmacy Mexican Pharmacy Online purple pharmacy mexico price list

  13. MarcelZor says

    http://indiaph24.store/# mail order pharmacy india

  14. RickyGrila says

    canada pharmacy reviews Licensed Canadian Pharmacy canadian pharmacy king

  15. MarcelZor says

    https://indiaph24.store/# top 10 pharmacies in india

  16. StevenJeary says

    medication from mexico pharmacy: Mexican Pharmacy Online – buying prescription drugs in mexico

  17. RickyGrila says

    mexico pharmacy Online Pharmacies in Mexico mexican border pharmacies shipping to usa

  18. MarcelZor says

    https://mexicoph24.life/# mexico drug stores pharmacies

  19. MichaelLIc says

    https://indiaph24.store/# indianpharmacy com

  20. RickyGrila says

    п»їlegitimate online pharmacies india indian pharmacy fast delivery india pharmacy mail order

  21. MarcelZor says

    https://canadaph24.pro/# canadian drug pharmacy

  22. StevenJeary says

    canadian pharmacies comparison: canadian pharmacy sarasota – best canadian pharmacy online

  23. RickyGrila says

    buying prescription drugs in mexico buying from online mexican pharmacy buying prescription drugs in mexico online

  24. MarcelZor says

    https://mexicoph24.life/# mexico drug stores pharmacies

  25. RickyGrila says

    indian pharmacy indian pharmacy fast delivery online pharmacy india

  26. MarcelZor says

    https://canadaph24.pro/# best canadian pharmacy

  27. RickyGrila says

    mexican rx online mexico pharmacy medication from mexico pharmacy

  28. MarcelZor says

    https://canadaph24.pro/# canadian pharmacy cheap

  29. MichaelLIc says

    https://canadaph24.pro/# canadian pharmacy 24

  30. RickyGrila says

    mexican drugstore online mexican pharmacy mexico pharmacies prescription drugs

  31. MarcelZor says

    http://indiaph24.store/# india pharmacy mail order

  32. RickyGrila says

    buying prescription drugs in mexico online Online Pharmacies in Mexico medicine in mexico pharmacies

  33. MarcelZor says

    http://mexicoph24.life/# medication from mexico pharmacy

  34. MichaelLIc says

    https://canadaph24.pro/# pharmacy com canada

  35. RickyGrila says

    canadian pharmacy 365 Prescription Drugs from Canada best canadian pharmacy

  36. MarcelZor says

    http://canadaph24.pro/# canadian pharmacy 24h com safe

  37. RickyGrila says

    mexican online pharmacies prescription drugs Mexican Pharmacy Online medication from mexico pharmacy

  38. MarcelZor says

    http://indiaph24.store/# buy prescription drugs from india

  39. RickyGrila says

    buying from online mexican pharmacy Online Pharmacies in Mexico medication from mexico pharmacy

sativa was turned on.mrleaked.net www.omgbeeg.com

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More